1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সংসদ সদস্য প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর উপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বোয়ালখালীতে জালে আটকা ৯ কেজি ওজনের অজগর সাপ নির্বাচনে জামায়াত কোনো জোট গঠন করবে না জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান তরুণ প্রজন্মের জন্য চট্টগ্রামকে গ্রিন, ক্লিন, হেলদি ও সেইফ সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন পটিয়া পল্লী মঙ্গল সমিথির রাস উৎসব উপলক্ষে ধর্মসভা,প্রধান অতিথি বিএনপি নেতা-এনামুল চন্দনাইশে হযরত শাহ্ সুফি ডা: আহমদুর রহমান (ক.) আল-মাইজভান্ডারী’র বার্ষিক ওরশ শরীফ সম্পন্ন চীবর উৎসর্গের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হলো হাজারীরচর জ্ঞানাঙ্কুর বিহারে কঠিন চীবর দান চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শিবগঞ্জ আসনে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন জননেতা শাহজাহান মিঞা। বোয়ালখালী শাকপুরায় শুরু পাঁচ দিনব্যাপী রাস মহোৎসব ও রাসমেলা বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স শূন্যতার ছায়া

কবিতার অসুখ ও নিঃশব্দ মৃত্যুর প্রান্তে—প্রতিমা দাশের এক ব্যতিক্রমী সৃষ্টি”

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫
  • ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

মো. কামাল উদ্দিনঃ
বাংলা কবিতার ভুবনে প্রতিমা দাশ এক সংবেদনশীল কণ্ঠস্বর। তাঁর কবিতা পড়ে মনে হয়, তিনি যেন শব্দ দিয়ে এক আশ্চর্য আত্মদর্শনের দরজা খুলে দেন, যেখানে পাঠক খুঁজে পায় জীবন, যন্ত্রণা, নিঃসঙ্গতা ও বিদ্রোহের গভীরতম প্রতিচ্ছবি। তাঁর সাম্প্রতিক কবিতা “কবিতার মৃত্যু” এক অনন্য দার্শনিক বয়ান—যেখানে কবিতার শরীর জ্বরে কাঁপে, শব্দেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর কালি-কলমের সম্পর্ক যেন ছিন্ন হওয়ার পথে।
“আঙুলের শব্দগুলো কারা যেন চুরি করে নিয়েছে”—এই লাইন দিয়েই শুরু হয় কবিতার অস্ফুট কান্না। প্রতিমা দাশ এখানে কবিতাকে এক জ্যান্ত শরীর হিসেবে দেখিয়েছেন, যেটি আজ ব্যথায় ছটফট করছে। ডায়েরির পাতায় পাতায় কবিতারা যেন জ্বরে বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকে, ছন্দহীন হয়ে। পাঠক লক্ষ করে, কবি শুধু শব্দের বা ছন্দের নয়, বরং একটি গোটা আবেগজগতের মৃত্যুঘণ্টা বাজাচ্ছেন।
তারপর “যতিচিহ্ন, সংকেত, স্বরবৃত্তের আবোল তাবোল প্রলাপ”—এই অংশে তিনি যেন বাংলা ছন্দবদ্ধ কবিতার প্রথাগত কাঠামোকে প্রশ্ন করছেন। প্রতিমার লেখনীতে শব্দ একদিকে প্রতিবাদ করে, অন্যদিকে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। “অক্ষরবৃত্তের মাত্রাহীন অহমিকা” যখন ভস্মীভূত হয়, তখন আমরা দেখি—এই কবিতাটি শুধু একটি নিভে যাওয়া শিখার নয়, বরং এক নবজন্ম প্রত্যাশার আর্তনাদও।
আধুনিক বাংলা কবিতায় অনেকেই যান্ত্রিক শব্দের বলয়ে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। প্রতিমা দাশ ব্যতিক্রম। তিনি শব্দকে শুধু ব্যবহার করেন না, তার বুকে কান পেতে শোনেন। তাঁর এই কবিতায় “প্রেমত্তা জলের শব্দগুচ্ছ প্রেমহীন শুস্ক জিহবায় বন্দী”—এই বাক্যটিতে নিহিত রয়েছে ভাষাহীন সময়ের হাহাকার। কবিতা যেন জল চাইছে, ভালোবাসা চাইছে, অথচ চারপাশে কেবল শূন্যতা।
শেষের দিকে কবি কবিতাকে একটি অসুস্থ শিশুর মতো করে দেখিয়েছেন—“কালির দোয়াতে কে যেন ডুবিয়ে রেখেছে জলপট্টি.. কবিতা খুঁজে বেড়াচ্ছে একটি নরম অরুণোদয় হাত।” এই করুণ অথচ মননশীল চিত্রকল্পে প্রতিমা দাশ যেন পাঠকের হৃদয়ের গভীরে কষে আঘাত করেন। এই কবিতার প্রতিটি পঙক্তি শব্দের গভীর গ্লানি ও প্রেমহীন সময়ের বিরুদ্ধে এক বিষণ্ণ আর্তি।
“প্রতিটি শব্দের বুকে বাজে নিঃশব্দ ক্ষরণ”—
এই পঙক্তিতে কবি যেভাবে শব্দ ও নৈঃশব্দ্যকে একাকার করে দিয়েছেন, তা বাংলা কবিতার ভুবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রতিমা দাশের “কবিতার মৃত্যু” শুধু একটি কবিতা নয়, এটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, সাহিত্যের সংকটচিহ্ন এবং কবির অন্তর্জগতের নিঃশব্দ প্রতিক্রিয়া। তাঁর প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা এবং আরও সৃষ্টিশীল পথচলার জন্য শুভ কামনা।
মূল কবিতা: কবিতার মৃত্যু
প্রতিমা দাশ
আঙুলের শব্দগুলো কারা যেন চুরি করে নিয়েছে,
তাইতো কবিতাদের এখন ভীষন অসুখ।
ডায়েরির পাতায় পাতায় জ্বরের হুড়োহুড়ি,
পরিতাপের দেহে ছন্দহীন পারদের উঠানামা।
যতিচিহ্ন, সংকেত, স্বরবৃত্তের আবোল তাবোল প্রলাপ,
শরীর থেকে জেগে উঠে আগুনের দহন।
ক্রমাগত ভস্মীভূত হয় অক্ষরবৃত্তের মাত্রাহীন অহমিকা,
বহুদূরে দ্রুত লয়ে কবিতা পাঠে আসর বসেছে..
প্রেমত্তা জলের শব্দগুচ্ছ প্রেমহীন শুস্ক জিহবায় বন্দী।
তবুও যেন কবিতাদের জ্বর নামে না,
কালির দোয়াতে কে যেন ডুবিয়ে রেখেছে জলপট্টি..
কবিতা খুঁজে বেড়াচ্ছে একটি নরম অরুণোদয় হাত।
কপালটা ছুঁয়ে দেখার জন্য কেউ নেই আশেপাশে,
প্রতিটি শব্দের বুকে বাজে নিঃশব্দ ক্ষরণ!

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট