রবিউল হাসান, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী):
সোনাইমুড়ীতে ৭ বছরের কন্যা শিশু ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার অভিযোগ উঠেছে থানার ওসির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সকালে ওসি সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিম রাস্তাদিয়ে হেটে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে উরুতে কেটে গিয়েছে। শিশুটি সাথে ধর্ষণের মত কোন ঘটনা ঘটেনি।
ভিকটিমের মা মরিয়ম আক্তার রাতেই বাদি হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই একটি রাজনৈতিক দলের উপজেলা পর্যায়ের নেতা সহ পাঁচ জনকে আটক আটক করেছে পুলিশ। তবে সকালে সাংবাদিকদের সামনে ভিন্ন কথা বলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, শিশুর মা মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করেন। দীর্ঘ ছয় বছর তার মায়ের সাথে বাবার সম্পর্ক নেই। নানার বাড়িতে শিশুটি মায়ের সাথে বসবাস করছে। শনিবার(২২ মার্চ) বিকালে উপজেলার নদোনা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শাকতলা এলাকায় ৭ বছরের ওই শিশুকে ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী শিশু ওই এলাকার একটি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বিকাল ৫ টার দিকে ইফতার নিয়ে নদনা বাজার থেকে ফেরার পথে তাকে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই বিষয় নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থা শিশুটি হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে রয়েছে। গায়ে দেওয়া কম্বলের বাইরে বেরিয়ে থাকা পায়ে গড়িয়ে পড়া রক্তের ছাপ এখনো স্পষ্ট। সজাগ থাকলেও এখনো আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগী শিশুটি।
হাসপাতালে বিছানায় বসে ভিকটিমের নানি রাবেয়া খাতুনের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, ২২ মার্চ বিকালে নদনা বাজারের পাশেই মামার বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে ইফতার দিয়ে ফিরছিলো শিশুটি। পথেই বাজারের অদূরে দোকানপাট বন্ধ একটি গলিতে পৌছালে সেখানে পেছন থেকে মুখ চেপে একটি দোকানের ভেতরে টেনে হেচড়ে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এর পরে শিশুটিকে বাইরে বের করে দিয়ে দোকানে তালা মেরে পালিয়ে যায় ধর্ষকেরা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটি বাসায় ফিরলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
শিশুটি জানায়, তাকে মুখ চেপে ধরে অন্ধকার দোকানের ভেতরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। তবে সে এখনো মানুষিক ভাবে আতঙ্কগ্রস্ত থাকায় ধর্ষকদের নাম বলতে পারেনি।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগীর পরিবার রাতেই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে হানিফ, বাদশাহ, ফজলু, সবুজ ও বাবুকে আটক করা হয়েছে। তবে সকালে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শিশুটি ইফতার নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে গিয়ে উরুতে রক্তাক্ত ক্ষত হয়। রাজনৈতিক কারনে অনেককে এই ঘটনায় যুক্ত করা হচ্ছে।
এবিষয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডাঃ রাজীব আহমেদ চৌধুরী জানান, শিশুটি গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার ব্লিডিং বন্ধ হয়েছে।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত