মো.কামাল উদ্দিনঃ
ঘরটায় তখনো ছড়িয়ে আছে সন্ধ্যার কোমল আলো। লাল রঙের সোফায় বসে আছেন এক অনিন্দ্যসুন্দরী নারী—সোনালি আভায় ভেসে থাকা মুখ, কপালে টিপ, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকের হাসি, চোখে স্বপ্নের গভীরতা—তিনি বন্যা। নাম যেমন, তেমনি তার চলন, তার কথা—বহমান নদীর মত শান্ত অথচ গভীর।
আর তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক ছোট্ট প্রেমিক—জগতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রেমিক যদি কাউকে বলা যায়, সে হচ্ছে কাশিফ। না, সে এখনও প্রেমের সংজ্ঞা বোঝে না, বোঝে না চিরন্তন কবিতার ছন্দ, কিন্তু তার চোখের ভাষা বলে দেয়—সে ভালোবাসে।
বন্যা আজ বিশেষ সাজে, তার শাড়ি যেন রঙের রূপকথা বলছে—সবুজে নকশা, নিচে রাঙা পাড়, চোখে চোখ রেখে বলে দেয়—সে আজ কারও জন্যে অপেক্ষায় ছিল। আর কাশিফ, হাতে তুলে নিয়েছে মিষ্টির এক টুকরো—যেন অমৃত! নিজে মুখে না দিয়েই সোজা এগিয়ে দিলো বন্যার দিকে।
এই মুহূর্তটা যেন কোনো চিত্রকরের তুলিতে আঁকা এক জীবন্ত ছবি—যেখানে ভালোবাসা বয়স চেনে না, চেনে না সম্পর্কের কঠিন সংজ্ঞা, শুধু জানে—যে মানুষটা আপন, তাকে মিষ্টিমুখ করাতে হয় প্রথমে।
বন্যা তাকিয়ে থাকেন কাশিফের দিকে—স্নেহে, বিস্ময়ে আর এক অজানা উষ্ণতায়। কাশিফের হাতে ধরা মিষ্টিটা তখন হয়ে ওঠে সবচেয়ে মূল্যবান উপহার—জগতের সব প্রেমের প্রতীক যেন গলে গিয়ে পড়ে সেই ছোট্ট মুহূর্তে।
কে বলেছে প্রেম কেবল তরুণ-তরুণীর গল্পে সীমাবদ্ধ? প্রেম তো এমনই—মায়ের চোখে, ছোট্ট হৃদয়ের সাহসে, এক মুঠো মিষ্টির অফারে।
আর বন্যা—সে শুধু সবার চোখে সুকন্যা নয়, সে আজ একজন প্রেমিকার প্রতীক, যে জানে ভালোবাসা পেতে হলে কখনো কখনো একটুখানি অবাক হাসি আর এক চিলতে অনুভবই যথেষ্ট।
এভাবে কাশিফের প্রেমে, মিষ্টির স্বাদে আর বন্যার চাহনিতে গড়ে উঠলো এক ক্ষণস্থায়ী কিন্তু চিরন্তন রোমান্স—যা হয়তো কোনো কবির ছন্দে, কোনো শিল্পীর তুলিতে কিংবা কোনো দাদুর গল্পে বেঁচে থাকবে যুগের পর যুগ।
তারা জানে না—এই ছবির ভেতরে লুকিয়ে আছে একটি অমর কাব্য।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত