বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
হেমন্তের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। শীতের হালকা স্পর্শে দিনের শুরুতেই চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর এলাকায় ঝকঝকে সবুজ লাউয়ে ভরে উঠেছে কৃষক মো. সাজ্জাদ হোসেনের ক্ষেত। মাচার ফাঁক গলে আসা রোদে ঝুলতে থাকা লাউগুলো যেন জানান দিচ্ছে আগাম মৌসুমের সম্ভাবনার কথা।
উঠে যাওয়া আমন ধানের জমিতে এখন এলাকাজুড়ে শিম, বরবটি, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির চাষ চলছে। তবে সাজ্জাদ সবার আগে লাউ চাষ শুরু করে পাচ্ছেন অতিরিক্ত সুবিধা। ৪০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের লাউ লাগিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন সকালেই ক্ষেত পরিচর্যা—নিড়ানি, মরা পাতা পরিষ্কার ও রোগবালাই পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে।
সপ্তাহে তিন দিন তিনি লাউ বিক্রি করেন। আকারভেদে প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাজ্জাদ জানান, চলতি মৌসুমে লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। গত এক মাসেই লাউ বিক্রি করে পেয়েছেন ২৪ হাজার টাকা। গাছের বর্তমান অবস্থা ভালো থাকায় পুরো মৌসুমে এক লাখ টাকার মতো আয়ের আশা করছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কম খরচে দ্রুত ফলন পাওয়া যায় বলে এবার লাউ চাষ করেছি।’ আশ্বিন মাসে বীজ থেকে চারা তৈরি করে লাগানোর প্রায় দুই মাসের মধ্যেই ফলন তুলতে শুরু করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উচ্চ ফলনশীল জাতের লাউ সারা বছরই চাষযোগ্য। বীজ বপনের ৪০–৪৫ দিনের মধ্যেই লাউ সংগ্রহ করা যায়। প্রচলিত জাতের তুলনায় এ জাতের ফলন আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কৃষিবিদ কল্পনা রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন লাউয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। কৃষকরাও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন সম্ভব।’
সাজ্জাদের হিসাব অনুযায়ী, তার ক্ষেতের ২৪০টি মাদায় লাউ রোপণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১,২০০টি লাউ বিক্রি করেছেন। আরও তিন শতাধিক লাউ চারা রয়েছে। প্রতিটি গাছে ৩০–৪০টি লাউ পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
আগাম চাষ, কম খরচ ও নিশ্চিত লাভজনক হওয়ায় বোয়ালখালীর কৃষকদের মধ্যে লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত