বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর আমুচিয়া ইউনিয়নের ধোরলা গ্রামে অবস্থিত উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চিত্র যেন অবহেলার প্রতিচ্ছবি। স্বাধীনতার আগে স্থাপিত শতবর্ষের পুরনো এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি আজ চরম বেহাল অবস্থায় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। নেই বিদ্যুৎ, নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, নেই চলনসই টয়লেট—আর পুরনো ভবনের ছাদ ও দেয়ালের ফাটল যেন যেকোনো সময় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শঙ্কা জাগায়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী কার্ডিওগ্রাফার মো. জাবেদ বিগত ১৫ বছর ধরে এখানে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘ভবনটির ছাদে ফাটল, দেয়ালে ধস। গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় কাজ করা দুর্বিষহ। অনেক সময় মনে হয় হিটস্ট্রোক হয়ে যাবে। সবচেয়ে ভয় লাগে, ছাদ ভেঙে যদি মাথার ওপর পড়ে।’
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় , একসময় এই কেন্দ্রটিতে সন্তান প্রসবসহ প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা মিলত। কিন্তু বর্তমানে ন্যূনতম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও নেই। এতে রোগীরা আসতে ভয় পান।
চিকিৎসা নিতে আসা শারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমার ছোট ছেলে ওয়াসিমকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু পরিবেশ এমন নোংরা, গরুর গোয়ালও এর চেয়ে ভালো। এখান থেকে তো রোগ সারবে না, বরং নতুন রোগ হয়ে যাবে।’
৭০ বছর বয়সী নুরুল ইসলাম নামের এক রোগী বলেন, ‘গরীব মানুষ, প্রাইভেট হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই ঝুঁকি জেনেও এখানে আসি। কিন্তু ভবনের যা অবস্থা, কখন মাথার ওপর ভেঙে পড়ে কে জানে।’
স্থানীয় প্রবীণ মোহাম্মদ মুহাজিদ ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে থেকেই এই কেন্দ্রটা দেখে আসছি। এত পুরনো প্রতিষ্ঠান আজও কেন সংস্কার হয়নি, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কি দেখেও দেখে না?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, ‘বোয়ালখালীর বেশির ভাগ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা খারাপ। ধোরলার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে চলতি বছরই এটি পুনর্নির্মাণের অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’