
রবিউল হাসান, নোয়াখালী:
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিনের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহ্ফিলের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় তার নিজ গ্রাম রুহুল আমিন নগরে অবস্থিত জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবদুল মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আকতার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিনের শওকত আলী, নাতনি বৃষ্টি আক্তার, মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, সরকারি বিভিন্ন দফ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।
সভাপতির বক্তব্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আকতার বলেন, এখনকার বাচ্চারা জানেনা এই দিনটি কেনো পালন করা হয়। তারা বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিনের জীবনী সম্পর্কে জানেনা। এখানে বীরশ্রেষ্ঠের নামে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দিন যাতে তারা এই গ্রন্থাগারে এসে বই পড়ে। যারা দেশের হাল ধরেছে তাদের ইতিহাস সম্পর্কে জানা এ সময়ের ছেলে মেয়েদের প্রয়োজন আছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের এই দিনে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ রুহুল আমিনকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।
১৯৩৪ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বাগপাঁচরা বর্তমানে রুহুল আমিন নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫৩ সালে নৌবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি চলে যান ত্রিপুরা, যোগ দেন ২ নম্বর সেক্টরে। ভারত সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দুটি টাগবোট উপহার দেয়। এগুলোকে গানবোটে রূপান্তর করা হয়।
এর নামকরণ করা হয় ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’। রুহুল আমিন নিয়োগ পান পলাশের ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশার হিসেবে।
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর মোংলা থেকে পদ্মা ও পলাশ খুলনার দিকে আসছিল। রূপসা নদীতে পদ্মা ও পলাশের ওপর ভুল সিগন্যালের কারণে মিত্র বাহিনীর বিমান থেকে গোলা ছোড়া হয়। এতে পলাশ ধ্বংস হয় এবং রুহুল আমিন আহত হন। আহতাবস্থায় তিনি রাজাকারের হাতে ধরা পড়েন। আহত এ বীর সন্তানকে তারা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে।