বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে দুই সন্তানকে নিয়ে প্রবাসী স্বামী আবুল মহসিনের (৪৮) মরদেহের অপেক্ষায় দিন গুনছেন স্ত্রী ঝিনু আক্তার। পরিবারের অভাব ঘোচাতে দুই বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি দিয়েছিলেন মহসিন। কিন্তু মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রিয়াদের জয় মাহিয়ান ডিস্ট্রিকের রস্তানুরা সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরণদ্বীপ সৈয়দ নগর গ্রামের মরহুম আবদুল হাকিমের ছেলে মহসিন দোকানের ভিসায় সৌদি গেলেও কফিল দোকান দেননি। কখনো নির্মাণশ্রমিক, কখনো মজুরি ভিত্তিক কাজে জীবিকা চালাতেন তিনি। সর্বশেষ একটি মুরগির খামারে কাজ করছিলেন।
মহসিনের স্ত্রী ঝিনু আক্তার বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে মরদেহ দেশে আনতে তিন লাখ টাকা লাগবে। আমাদের সেই সামর্থ্য নেই। ছোট দুই সন্তান নিয়ে অপেক্ষা করছি। সরকার চাইলে অন্তত স্বামীর লাশটি দেশে এনে দিতে পারে।’
গতকাল মহসিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মুস্তাহিনা মহসিন বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে আনমনে কথা বলছে। ৪ আগস্ট বাবার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল তার। সে এখনো বিশ্বাস করে—বাবা ফিরে আসবেন। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বড় ছেলে জাহিন আবদুল্লাহ মুনতাসীর জানে—বাবা আর নেই। তার অনুরোধ, ‘বাবার মরদেহ পেলে অন্তত এই মাটিতেই কবর দিতে পারব।’
মহসিনের বড় ভাই কাজী এম নাসের কণ্ঠে কেবলই অসহায়তা—‘আমরা তিন ভাই, দুই বোন। গত ২৭ জুলাই ওমান প্রবাসী এক ভাই মারা গেছে। এবার মহসিনও চলে গেল। নিরুপায় হয়ে সরকারের সহযোগিতা চাইছি।’