বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার জৈষ্ঠ্যেপুরা ও আশপাশের পাহাড়ি জনপদ যেন উৎসবের রঙে রঙিন হয়েছিল গত দুই দিন। দেশের জনপ্রিয় সাইক্লিং কমিউনিটি বিডি সাইক্লিস্টস এ জনপদে আয়োজন করে দুই দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী ‘বাইক প্যাকিং’। গত শুক্রবার ৩০ সাইক্লিস্টের দলটি ঢাকা থেকে এসে জড়ো হয় উপজেলার ডাকবাংলোয়। ব্যাকপ্যাক, সাইকেল আর অভিযাত্রী মন—সব মিলিয়ে যেন ছোটখাটো এক ভ্রমণ–উৎসব।
ডাকবাংলোয় বিশ্রামের পর সকালে তারা ছুটে যান জৈষ্ঠ্যেপুরার উঁচুনিচু পাহাড়ে। এরপর মেধসমুনি আশ্রম, কর্ণফুলীর তীরের মুক্তিযোদ্ধা রিভার ভিউ, আর পরদিন ভোরে পারকি সমুদ্রসৈকতে সূর্যোদয়—সব মিলিয়ে সফর যেন একটানা রোমাঞ্চে ভরা।
বিডি সাইক্লিস্টসের ভলান্টিয়ার ফুয়াদ আহসান চৌধুরী দৈনিক বাংলার কাছে বলেন,
“আমরা ঢাকার একটি সাইক্লিং কমিউনিটি। এখানে ৮ বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের প্রবীণ—সব বয়সের মানুষ আছে। ছুটির দিনে যেখানে যাই, তাবু গেঁড়ে থাকি। দেশ ঘোরা—এটাই আমাদের নেশা।”
পাহাড়–নদীর এই জনপদে আসার গল্পটিও বেশ মনোমুগ্ধকর। ফুয়াদ বলেন,
“২০২৫ সালের শেষ দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জৈষ্ঠ্যেপুরা, আমুচিয়া আর কড়লডেঙ্গার ছবি–ভিডিও দেখে চোখ আটকে যায়। কয়েকজন সদস্য আগে এসে দেখে গেলে আমরা মুগ্ধ হই। তারপর সবাই মিলে আসার সিদ্ধান্ত নিই।”
২০১১ সালের ১৭ মে যাত্রা শুরু করা বিডি সাইক্লিস্টসে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৬০–৭০ হাজার। এই সফরে অংশ নিয়েছেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন কর্মী, ব্যাংকার, আইটি–পেশাজীবীসহ নানা পেশার মানুষ। বয়স ২০ বছর থেকে ৬৪ বছর—বৈচিত্র্য এখানেও।
দলের সদস্য এমডি কাইছার হোসেন বলেন,
“১০ বছর ধরে সাইক্লিং করছি। আমরা শুধু ঘুরি না, বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করি। যেখানেই যাই, ছবি–ভিডিও তুলে দেশের সৌন্দর্য বিশ্বে ছড়িয়ে দিই।”
সাইক্লিস্ট সানা আক্তার বলেন,
“এই গ্রুপে না এলে এতদূর ঘোরা একজন মেয়ের জন্য কঠিন ছিল। এই কমিউনিটি আমাকে শক্তি আর আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।”
দুই দিনের সফরে সবুজ পাহাড়, নদীর হাওয়া আর প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্য সাইক্লিস্টদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। ফিরে যাওয়ার সময়ও তাদের চোখে মুখে লেগে ছিল বোয়ালখালীর মায়া।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত