বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
চোখে আলো নেই। তবু হাল ছাড়েননি ১৭ বছরের আবদুল কাদের। এক হাতে পপকর্ন বাজা, অন্য হাতে জীবনের স্বপ্ন।
বোয়ালখালীর কড়লডেঙ্গা আহলা দরবার এলাকায় দেখা যায় তাকে। হাতে পপকর্ন বাজা, মুখে হাঁক— “দশ টাকা, দশ টাকা।” পাশে বসে আছেন তার বাবা নুরুল ইসলাম, বিক্রি করছেন ২০ টাকার টুপি।
মাত্র তিন বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিরদিনের মতো দৃষ্টি হারান কাদের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আর কখনোই তার চোখে আলো ফিরবে না। কিন্তু অন্ধকার জীবনের কাছে হার মানেননি তিনি। ভিক্ষার বদলে বেছে নিয়েছেন পরিশ্রমের পথ। বিভিন্ন মাহফিল, দরবার ও ফিলিং স্টেশনে গিয়ে পপকর্ন বাজা বিক্রি করেন। হাতে টাকা ধরেই চিনতে পারেন কোন নোট কত টাকার।
কাদেরের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরুল চৌধুরীর বাড়ি। চার ভাইবোনের মধ্যে সে সবার ছোট। বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, “ছোটবেলায় টাইফয়েড জ্বরে ছেলের চোখ নষ্ট হয়েছে। কিন্তু সে হাত পেতে কিছু নেয় না। নিজে উপার্জন করেই চলতে চায়।”
ভাগ্যের কঠিন বাস্তবতায়ও দৃঢ় মনোভাবের কথা বললেন আবদুল কাদের। তার ভাষায়, “আমি অন্ধ। কিন্তু ভিক্ষা করি না। দেশবাসীর কাছে আমার একটাই আবেদন—আমাকে যদি একটা ছোট দোকান করে দেওয়া যায়, তবে আমি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে চলতে পারব।”