নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা বৃহস্পতিবার (১৮মে) সকালে পরিষদের এনেক্স ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।
পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান এর সঞ্চালনায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য আছমা বেগম, নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা, হিসাব ও নিরীক্ষা কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদুল আলম চৌধুরী, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরাসহ হস্তান্তরিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরা আলোচনায় অংশ নেন।
উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ জানান যে, উৎপাদন সক্ষমতার চেয়ে সূর্যমুখী চাষ কম উৎপাদিত হলেও কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। সভাপতি মহোদয় তৈলবীজ হিসাবে সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ এবং উৎপাদিত বীজের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ সহজ উপায়ে বাজারজাত করার সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান। এলক্ষ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ হতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি সভাকে জানান। এছাড়া কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ হতে কৃষকদের মাঝে পাওয়ার টিলার এবং সেচযন্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি সভাকে অবহিত করেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি সিভিল সার্জন জানান যে, জেলার করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ম্যাালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সজাগ রয়েছে এবং উপজেলা পর্যায়ে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান মৌসুমটি ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাবের মৌসুম বিধায় জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার জন্য তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি অনুরোধ জ্ঞাপন করেন।
জেলার সার্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সংস্থার জেলারবাসীর পুষ্টি সংক্রান্ত গবেষণায় উঠে এসেছে যে, এ জেলা পুষ্টি সংক্রান্ত সূচকে নিম্ন অবস্থানে রয়েছে। অথচ সরকারের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য সঠিক পুষ্টিমান সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যবান জনশক্তি একান্ত প্রয়োজন। কাজেই আমাদেরকে সকলের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যাভাসের পরিবর্তন, সঠিক রন্ধন প্রণালী অনুসরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে অনেকাংশে পুষ্টি প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। মাঠ পর্যায়ে পুষ্টির ওপর সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ হতে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া তিনি সকল ট্রেনিং ক্লাসে পুষ্টির বিষয়ে আলোচনা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভাপতি মহোদয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে মানসম্মত মৎস্য পোনা উৎপাদনের লক্ষ্যে হ্যাচারীর জন্য ব্রুডার ফিস সংগ্রহ এবং মুরগীর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জেলার মুরগী প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে বলে জানান।
এছাড়া তিনি স্ব স্ব বিভাগের এপিএর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য সকল বিভাগীয় প্রধানদের প্রতি অনুরোধ জ্ঞাপন করেন।