1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গাইবান্ধায় সাংবাদিকবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন পিপিএম পটিয়ার জিরি জনকল্যান সংঘের উদ্যোগে বন্যা দুর্গতদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “শিখর” বন্যা পরবর্তী বাসস্থান পুর্নাবাসনে ছাত্র সংগঠনের সহায়তা পটিয়ায় জন্মাষ্টমীর উদযাপন পরিষদের উদ্যেগে প্রার্থনা ও সভা অনুষ্ঠিত কক্সবাজারে শীর্ষ ৮ সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেফতার সোনাইমুড়ীতে ১ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ শাহ্ প্রকাশ নূর মিয়া ইন্তেকাল, জানাজা শুক্রবার মাদ্রাসায় না গিয়েও নিয়মিত বেতন তোলেন তিন শিক্ষক..! চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন।

সদকায়ে জারিয়া হবে সন্তান মা-বাবার জন্য -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২৬৮ বার পড়া হয়েছে

সম্পাদকীয়ঃ

যখন এই বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসছি তখন মনের মধ্যে একটি আনন্দ কাজ করছে। ছোটবেলায় খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম। কারো দুঃখ দুর্দশা সহ্য করতে পারতামনা। তাই টিফিনের টাকা খরচ করে অন্যের উপকার করার চেষ্টা করতাম। সেই দৃশ্য যখন সন্তানের মধ্যে দেখি তখন নিশ্চয় ভাললাগাটা হৃদয়ে গেঁথে যায়। প্রতি বছর রমজানে আমার সন্তান ও বন্ধুরা মিলে টিফিনের টাকা জমিয়ে ইফতার বিতরণ করে। সে আনন্দ টা তার অনেক বড়। আমাকে যখন বিস্তারিত বলে তখন মন দিয়ে শুনি। এমনকি সে বলে দেয় যেন সামাজিক মাধ্যমে এর কোন ছবি না দিই। মনে আসল দু কলম লিখি সন্তানদের নেক কাজ নিয়ে। আমাদের উচিৎ তাদের ভালকাজে উৎসাহ দেওয়া। সন্তান হবে মা বাবার জন্য সদকায়ে জারিয়া। প্রত্যেক মা-বাবার কাছে সন্তান পরম আদরের ধন। তাদের কলিজার স্পন্দন। সন্তান বিপদে পড়লে মা-বাবার অন্তর ছিঁড়ে যায়। তার খুশির জন্য সে নিজের জীবনকেও কঠিন বিপদের মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। তবুও সে সন্তানের ভালো চাইবে। সন্তান-সন্ততির প্রতি মা-বাবার অন্তরে আল্লাহ তায়ালা এক অকৃত্রিম ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ‘ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য।’ (সূরা কাহফ-৪৬) ‘তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ তায়ালার পরীক্ষা মাত্র।’ (সূরা আনফাল-২৮)। আমরা সন্তানের পার্থিব কল্যাণের কথা এত বেশি চিন্তা করি যে, যখন সে আখিরাত হারাতে বসে তাকে সেখান থেকে বের করে আনার চিন্তাও করি না। তাকে দ্বীনের বুনিয়াদি শিক্ষাগুলো থেকে দূরে রাখি। শিশু-কিশোর ও যৌবনে সে এমন সব কাজ করে, যা দ্বীনের বিপক্ষে তো যায়-ই; এমনকি মানবতার জন্যই ক্ষতিকর। সে নিজে পাপ করছে। কখনো পাপের ধারা তৈরি করছে; যাতে ক্রমাগত তার আমলনামায় মন্দ কাজের পুরস্কার যোগ হতে থাকে। এ কারণে সন্তানকে প্রকৃত মানুষ হওয়ার সবক দিতে হবে। ইসলামের বিধিবিধান, নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সম্পর্কে তাকে অবহিত করতে হবে। তাই মহানবী সা: বলেছেন, ‘… সন্তানকে আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দান করা একসা (একটি পরিমাপ) শস্য আল্লাহর রাস্তায় সাদকা করা থেকেও উত্তম।’ (তিরমিজি) অন্য এক হাদিসে মহানবী সা: ইরশাদ করেন, ‘কোনো পিতা তার সন্তানকে ভালো আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া থেকে উত্তম আর কোনো পুরস্কার দিতে পারে না।’ (তিরমিজি)

সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষা দিন। কঠিন সময়েও সে বিপথগামী হবে না। কারণ মানুষের মধ্যে যখন সঠিক দ্বীনি জ্ঞানের অভাব থাকে শয়তান ভালো কাজের ছলনায় তাকে দিয়ে অনেক মন্দ করিয়ে নেয়। তাই মন্দ থেকে ভালোর তফাত জানতে হলে শরয়ি জ্ঞানে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে। এতে আপনিও জবাবদিহিতার হাত থেকে বাঁচবেন, সন্তানও বাঁচবে জাহান্নামের আগুন থেকে। মনে রাখবেন, আপনার দায়িত্বহীনতার কারণে যদি সে দ্বীনের সঠিক শিক্ষা না পায়, সে বাপ বলে পরকালে আপনাকে ছাড় দেবে না। নিজে তো জাহান্নামে যাবেই, আপনাকে সাথে নিয়ে যাবে। তাই পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন থেকে তোমরা নিজেরা বাঁচো আর তোমাদের পরিবার-পরিজনকেও বাঁচাও’। (সূরা তাহরিম, আয়াত-৭)। এই জ্ঞানার্জন করার জন্য আপনাকে যে মাদরাসায় পড়তে হবে বিষয়টি তেমন নয়। আপনি হয়তো জানেন আলিম হতে হলে মাদরাসায় পড়া শর্ত নয়। তাকে দ্বীনের জ্ঞান সম্পর্কে দক্ষ করে তুলুন, দ্বীনের বিধানগুলো জানতে হবে। এমন সন্তান আপনার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ বয়ে আনবে। সুতরাং আপনি সন্তানের ব্যাপারে এমনভাবে চিন্তা করুন যেন সন্তানগুলো আপনার জন্য নেক সন্তান হয়ে যায়।

আমরা আল্লাহর কাছে নিজের চাহিদামতো অনেক কিছু চাই, কিন্তু নেক সন্তান চাই না। যদিও তিনি আমাদের নিজ অনুগ্রহে এই নিয়ামতে ধন্য করেন তার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করি না। আমাদের প্রতি তার যে হক রয়েছে তা-ও আমি আদায় করি না। সন্তানকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করুন, মানুষ হিসেবে বিশেষ করে একজন মুসলমান হিসেবে সে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে শিখুক। সুশিক্ষা, চারিত্রিক মাধুর্য, দাওয়াতে ইলাল্লাহর দায়িত্বসহ আধুনিক ও ইসলামী জ্ঞানের সমন্বয়ে একজন তাকওয়াবান প্রকৃত মানুষে পরিণত করুন। এই সন্তান কখনোই আপনার অবাধ্য হবে না। কারণ সে পিতামাতার হক সম্পর্কে জানে। মানুষের মর্যাদা বোঝে। এসব দিক বিবেচনায় রাসূল সা: বলেছেন, ‘সাবধান, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল কিয়ামতের ময়দানে প্রত্যেককে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। পুরুষ তার ঘরের অভিভাবক, তাকে তার অধীনে থাকা সন্তান ও অন্যান্য সদস্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। মহিলা তার স্বামীর ঘরে একজন অভিভাবক, তার থেকে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে কৈফিয়ত নেয়া হবে।’ (বুখারি) সূরা লোকমান, আয়াত-১৬ সন্তানের ঈমান-আমল ও মানবিকতা উন্নয়নে কত সুন্দর কথা বলছে কুরআন। ‘হে বৎস, নামাজ প্রতিষ্ঠা করো, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ করো আর বিপদ এলে সবর করো। নিশ্চয় এটি সাহসিকতার কাজ। আর অহঙ্কারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না, আল্লাহর জমিনে কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিচরণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না। তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো, অবশ্যই আওয়াজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অপ্রীতিকর হচ্ছে গাধার আওয়াজ।’ (সূরা লোকমান, আয়াত : ১৭-১৯)। আপনার সন্তানের কোমল হৃদয়ে এগুলো জায়গা করে দিতে পারলে সে অবশ্যই নেক সন্তান হবে। এই নেক সন্তান সম্পর্কে মহানবী সা: বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায় তখন তার আমলের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি আমল তার জন্য খোলা থাকে। তা হলো- সাদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় আর নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে। (মুসলিম) ‘আল্লাহ জান্নাতে নেককার বান্দার মর্যাদা সমুন্নত করবেন, তখন জান্নাতি ব্যক্তি বলবে, হে আমার রব, কেন আমার জন্য এই উচ্চ মর্যাদা? তখন আল্লাহ তায়ালা বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণেই তোমার জন্য এই মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।’ (মুসনাদ আহমাদ)। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে নেক সন্তান দান করুন।
লেখকঃ কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট