আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের চকবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী মাত্র ২ জন,আর পরীক্ষা নিচ্ছেন পাঁচজন শিক্ষক। স্কুলটিতে শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অর্থেরও যথাযথ ব্যবহার হয়নি।
সরেজমিনে,উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের চকবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় দু’টার পর পরীক্ষা দিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণীর একজন ও পঞ্চম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী। এসময় দেখা যায় তাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন পাঁচজন শিক্ষক। পরীক্ষা শুরু করা হয় আধা ঘন্টা পর। প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার সরকার উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে আসার কথা বললেও তাকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান,আমি গিরিধারীপুর নিজা বাসা নির্মাণ করছি সেখানে দেখ ভাল করছি। সোমবার (২৮ আগষ্ট) দুপুরে স্কুলটিতে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়। পরে প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার সরকারকে এস,এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দেখা কাকতালীয়ভাবে দেখা পাওয়া যায়। ওই প্রধান শিক্ষককে তার বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী কমের বিষয়ে জানতে চাইলে,তিনি জানান,স্কুলটির অবস্থা আগে আরও নাজুক ছিল। আমি যোগদানের পর থেকে তবুও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দুই লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান,এক লাখ টাকা উত্তোলন করে সাদা চুন ও প্লাষ্টার করেছি। বাকি টাকা দিয়ে আরও কিছু কাজ বাকী রয়েছে সেগুলো করা হবে বলে জানান। এতো ছাত্র-ছাত্রী কমের পরও এতো বেশি বরাদ্দ পেলেন কি করে। তার উপর আপনার স্কুলে একটি তিনতলা বিল্ডিংও হচ্ছে। ফের আবার উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের ওয়াশ ব্লকও হবে। প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার সরকার জানান,এসব ঘুরে ঘুরে নিতে হয়েছে।
চকবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার পঞ্চম শ্রেনীর ক্লাশরুমে,এরুমে শুধু এরকম একটি ব্যানার দেখতে পাওয়া যায়। প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রুম সজ্জিত নেই।এবং কোন খেলনা নেই। অপরিস্কার নোংরা অবস্থায় রয়েছে রুমটি। বাথরুমের অবস্থাও অপরিচ্ছন্ন। শ্রেনী কক্ষ কোনটি বোঝার কোন উপায় নেই। বিবর্ণ,নোংরা,অপরিচ্ছন্ন একটি বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখে মনে হবে না যে সরকার এতে প্রতিবছর কিছু না কিছু বরাদ্দ দিয়েছেন।
বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক কোন ব্যবহার হয়নি বিদ্যালয়টিতে।
এব্যাপারে ওই ক্লাষ্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার ফিরোজ কবির এর নিকট এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,২৮ আগষ্ট ওই প্রধান শিক্ষক কোনো ছুটি নেননি এবং প্রধান শিক্ষককে শিক্ষার্থী বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে এবিষয়ে আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা একটু বেশী করে লেখালেখি করেন।
অপরদিকে চকবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন নির্মাণে ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে কাজ করছেন এমন অভিযোগও আছে। এখানে কাজের মানও সন্তোষজনক নয়। এককথায় বিদ্যালয়টিতে সব মিলিয়ে হ,য,ব,র,ল অবস্থা বিরাজমান।।