করোনাভাইরাস মহামারি, নিত্যপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ২০২২ সালে চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরো প্রায় সাত কোটি বেড়েছে। ফিলিপাইনভিত্তিক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। এডিবি জানিয়েছে, ২০২২ সালে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১৫ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ছিল। করোনা মহামারির কারণে বাড়তি ছয় কোটি ৭৮ লাখ মানুষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।মহামারি শুরুর আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করে ২০২১ সালে এডিবির অনুমান ছিল, আগের বছরের তুলনায় সাড়ে সাত থেকে আট কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে। ২০১৭ সালের মূল্যের ওপর ভিত্তি করে এবং মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে দিনে ২.১৫ ডলারের কম অর্থে জীবন যাপন করাকে চরম দারিদ্র্য বলছে বিশ্বব্যাংক। এডিবি জানিয়েছে, দারিদ্র্য হ্রাসে অব্যাহত অগ্রগতির প্রত্যাশা সত্ত্বেও এই অঞ্চলের জনসংখ্যার আনুমানিক ৩০.৩ শতাংশ (প্রায় ১.১৬ বিলিয়ন) মানুষের আয় ২০৩০ সাল নাগাদ দিনে গড়ে ৩.৬৫ থেকে ৬.৮৫ মার্কিন ডলার থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এডিবি বলছে, সংকট কাটাতে সামাজিক কল্যাণ জোরদার, আর্থিক পরিষেবাগুলোকে উন্নত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে জোর দিতে হবে এশিয়ার সরকারগুলোকে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ আলবার্ট পার্ক বলেন, ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল করোনাভাইরাস মহামারি কাটিয়ে উঠেছে। তবে জীবনযাত্রার বর্ধিত সংকট দারিদ্র্য দূরীকরণের গতিকে হ্রাস করছে।’ আলবার্ট পার্ক আরো বলেন, ‘দরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের সরকারগুলো সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। এডিবি বলেছে, করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার ফলে দুই বছরেরও কম সময় আগে এশিয়া ও বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুত বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আর্থ-সামাজিক পুনরুদ্ধার দুর্বল হয়ে পড়ে।