শরিফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর, ভাষাসৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা
এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর জানাযার নামাজ রাষ্ট্রীয় মর্যদায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের নিজ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬ মার্চ (শনিবার) সকাল পনে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহবাহী এ্যাম্বুলেন্স তার পিতৃভিটা শিবগঞ্জে পৌঁছালে রানীহাটি বাজার ঈদগাহ মাঠে জানাযার পূর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ কৃতি সন্তানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান। এসময় গোলাম আরিফ টিপুকে রাষ্টীয় সন্মান জানানো হয়। শেষ বারের মত গোলাম আরিফ টিপুকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তি, আত্মীয়-স্বজন ও তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধাসহ অনেকেই। এর আগে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এফ,এম আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে জানাযা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ নেয়া হয় রাজশাহীতে সেখানে আরেকটি জানাজা শেষে ঢাকায় শহীদ শহিদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু ১৯৩১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন । রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ১৫ মার্চ (শুক্রবার) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৩ বছর।