আবু নাঈম, বোয়ালখালী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা পাহাড়ে মেধস আশ্রমে শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় উপজেলার করলডেঙ্গার সন্ন্যাসী পাহাড়ের মেধস মুনির আশ্রমে চন্ডীপাঠ, মঙ্গল ঘট স্থাপন, ঢাকের বাদ্যের মধ্য দিয়ে মর্ত্যধামে দেবী পক্ষের আবাহন করা হয়েছে। কাঁসার ঘন্টা, শঙ্খধ্বনি, মহাযজ্ঞ, নামকীর্ত্তন পরিবেশন ও মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে।এসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্ত-অনুরক্তদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে আশ্রম প্রাঙ্গণ।
মেধস আশ্রমের অধ্যক্ষ বুলবুলানন্দ মহারাজ বলেন,পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে হবে বোধন, দেবীর ঘুম ভাঙানোর বন্দনা পূজা। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে সেদিন। পরদিন ১০ অক্টোবর সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আচার। অষ্টমী ও নবমী শেষে ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাম্ববলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার উৎপত্তি এ মেধস আশ্রমে। প্রতিবছরের ন্যায় মূল আচার-অনুষ্ঠান হিসেবে ঘট স্থাপন করে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা করা হয়।
শারদীয় দুর্গা উৎসবকে অকালবোধনও বলা হয়। অকালবোধন সম্পর্কে জানা যায়, ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারে ও লঙ্কার রাজা রাবণকে পরাজিত করতে শরৎকালে অকাল বোধনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করেন। সে পূজা অকালবোধন বা শারদীয়া দুর্গা পূজা হিসেবে খ্যাতি পায়। পুরাণ অনুসারে, রাজ্যহারা রাজা সুরথ এবং স্বজনপ্রতারিত সমাধি বৈশ্য একদিন মেধস মুনির আশ্রমে যান। সেখানে মুনির পরামর্শে তাঁরা দেবী দুর্গার পূজা করেন। দেবীর বরে তাঁদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ পূজা বসন্তকালে হয়েছিল বলে এর নাম ছিল ‘বাসন্তীপূজা’। বাসন্তীপূজা হয় চৈত্রের শুক্লপক্ষে, আর শারদীয় দুর্গাপূজা হয় শরৎকালে। তবে বর্তমানে শারদীয় দুর্গাপূজাই অন্যতম প্রধান উৎসবে পরিণত হয়েছে।
কালের বিবর্তনে ঋষি মেধসের আশ্রম লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে ঋষি মেধস মুনি ও এ আশ্রমের কথা ‘চণ্ডী’সহ বিভিন্ন শ্রাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। আজ থেকে শতবছর আগে স্বামী বেদানন্দ যোগবলে বিলুপ্ত এ আশ্রম আবিস্কার করেন।