1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
চন্দনাইশে পূর্ব জোয়ারায় ২০ দিনব্যাপী ভিক্ষু পরিবাসব্রত নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ না দেওয়ায় মানববন্ধন করলো রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ এর শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. দেলোয়ার হোসেনের ইন্তেকাল জমকালো আয়োজনে দোহাজারী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করলেন জাতীয় মহিলা ফুটবলর ঋতুপর্ণা চাকমা চট্টগ্রামে অসহায়দের মাঝে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এর শীতবস্ত্র বিতরণ বোয়ালখালীতে পিক-আপ মোটর সাইকেল সংঘর্ষে  দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত বোয়ালখালীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইল্ল্যার অউন ফোয়ানি উৎসব চন্দনাইশ বরকলে জামায়াতে ইসলামীর শীতবস্ত্র বিতরণ এপেক্স ক্লাব অব পটিয়ার উদ্যোগে শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ। ইক্বরা মডেল মাদ্রাসায় সবক নিয়েছে শিক্ষার্থীরা

বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • প্রকাশিত: শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

সম্পাদকীয়ঃ
১২ জানুয়ারি মাস্টারদা সূর্য সেনের ফাঁসিদিবস । ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সূর্য সেন ও বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তাদের ওপর ব্রিটিশ সেনারা নির্মম অত্যাচার করে। ব্রিটিশরা হাতুড়ি দিয়ে তাদের দাঁত ও হাড় ভেঙে দেয়। হাতুড়ি দিয়ে ইচ্ছেমতো পিটিয়ে অত্যাচার করে। এই অত্যাচারের এক পর্যায়ে মাস্টারদা ও তারকেশ্বর দস্তিদার অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তাদের অর্ধমৃত দেহগুলো ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে জেলখানা থেকে তুলে চার নম্বর স্টিমারঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মৃতদেহ দুটিকে বুকে লোহার টুকরো বেঁধে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরসংলগ্ন একটি জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। যাতে কেউ মাস্টারদা ও তারকেশ্বরের মৃতদেহও খুঁজে না পায়।
মাস্টারদা সূর্য সেন ছিলেন বিপ্লবী, ‘যুগান্তর’ দলের চট্টগ্রাম শাখার প্রধান এবং ১৯৩০ সালের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের প্রধান সংগঠক। পুরো নাম সূর্যকুমার সেন। ডাক নাম কালু। ২২শে মার্চ ১৮৯৪ সালে বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে অবস্থিত রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পরিবারে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। পিতা রাজমনি সেন ও মাতা শশী বালা সেনের চতুর্থ সন্তান ছিলেন। মাস্টারদা খুব অল্প বয়সেই তার মাতা-পিতাকে হারান। তিনি তার কাকা গৌরমনি সেনের কাছেই বড় হন। ছোটবেলা থেকেই সূর্য সেন পড়াশোনার দিকে পারদর্শী ছিলেন। তিনি দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি হরিশদত্তের ন্যাশনাল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন। বেশ কিছু কারণে তাকে এই কলেজ থেকে বিতাড়িত করা হয়। ফলে, তাকে পশ্চিম বঙ্গে অবস্থিত মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে থেকে বিএ কমপ্লিট করতে হয়।
মাস্টারদা সূর্য সেন বিয়ে করার পক্ষে ছিলেন না। তবে চন্দ্রনাথ সেন ও অন্যান্য আত্মীয়দের চাপে তিনি ১৯১৯ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগো পাড়ার নগেন্দ্রনাথ দত্তের ১৬ বছরের কন্যা পুষ্পকুন্তলা দত্তকে বিয়ে করেন। তার বিয়ের তিন দিন পরেই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসেন। ১৯২৬ সালে তার স্ত্রী টাইফয়েড রোগে মারা যান। বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়াশোনা করার দরুন তিনি যুগান্তর দলের সদস্য অধ্যাপক সতীশচন্দ্র চক্রবর্তীর সন্নিকটে আসেন এবং বিপ্লবী ভাবধারার সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর ১৯১৮ সালে চট্টগ্রামে ফিরে এসে তিনি অনুরূপ সেন, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নগেন্দ্রনাথ সেন প্রমুখদের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামে গোপন বিপ্লবী দল গঠন করেন। শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাকে অন্যান্য বিপ্লবীরা মাস্টারদা নাম দেন।
১৯১৯ সালের পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের ছাত্ররা ক্লাসবর্জনসহ সভাসমাবেশ করে। সভায় সূর্যসেন তার বক্তৃতায় ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হন। অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী আফ্রিকা থেকে এসে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ মানুষ উজ্জীবিত হয়েছিল।
এ সময়ের দুটি ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ। (১) ব্রিটিশ মালিকানাধীন জাহাজের শ্রমিকদের সফল ধর্মঘট এবং (২) ব্রিটিশ মালিকানাধীন সিলেট ও কাছাডের চা-বাগান শ্রমিকদের ধর্মঘট ও চাঁদপুরে ধর্মঘটি শ্রমিকদের ওপর পুলিশ এবং গোর্খা সৈন্যদের গুলিবর্ষণে অনেকের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আসাম-বেঙ্গল রেল ধর্মঘট শুরু হয়। বিদ্রোহকে আরো তীব্রতর করার জন্য মাস্টারদা সূর্য সেন ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চ গঠন করেন এবং ঠিক করা হয় যে, ১৮ই এপ্রিল ১৯৩০ সালে চারটি দল মিলে ইংরেজদের ওপর আক্রমণ করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী একদল বিপ্লবী রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে নেয়। এর ফলে চট্টগ্রাম সমগ্র ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য একটি দল চট্টগ্রামের নন্দনকাননে টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ অফিসে আক্রমণ করে সব যন্ত্রপাতি ভেঙে দেয় এবং সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আরেকটি দল পাহাড়তলীতে অবস্থিত চট্টগ্রাম রেলওয়ে অস্ত্রাগার দখল করে সেখান থেকে উন্নতমানের রিভলবার ও রাইফেল লুণ্ঠন করে নেয়। ২২শে এপ্রিল ১৯৩০ সালে বিপ্লবীরা যখন জালালাবাদ পাহাড়ে অবস্থান করছিল তখন সশস্ত্র ইংরেজ সৈন্যরা তাদের ওপর আক্রমণ করে এবং দুই ঘণ্টার যুদ্ধের পর ব্রিটিশ বাহিনীর ১০০ জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর ১২জন শহিদ হন। এই ঘটনাটিই ‘জালালাবাদ যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
আগ্নেয়াস্ত্র বহন করার কারণে মাস্টারদা সূর্য সেনকে ১৪ই আগস্ট ১৯৩৩ সালে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এরপর ১৯৩৪ সালের ১২ই জানুয়ারি মধ্যরাতে সূর্য সেনকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট