1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পটিয়ায় ওঁকারেশ্বর যোগমঠ প্রতিষ্টাতা স্বামী জীবনন্দ অবধূতের ৮০তম তিরোধান দিবস পালন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রলি-সিএনজি সংঘর্ষে ২ জন নিহত। এপেক্স ক্লাব অব পটিয়ার বোর্ড মিটিং এ বক্তারাঃ সমাজ ব্যবস্থা পূণরায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। শিবগঞ্জে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে দোকানঘর ও উপকরণ বিতরণ। চট্টগ্রামে কলেরার টিকা কার্যক্রম শুরুর তৃতীয় দিনে উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম রাসূল (সা.)সারা জাহানের জন্য রহমত স্বরূপ। হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। মাশুল —— .আমিরুল ইসলাম কবির চকরিয়ায় জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে উন্নয়ন মেলা-২৩ এর উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধায় জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী মাটিরাঙ্গায় স্থানীয় সরকার দিবসের মেলার সমাপ্তি

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে পানির কষ্টে ¤্রাে সম্প্রদায়, বাড়ছে নানা রোগব্যাধি

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবানে চিম্বুক এলাকার প্রায় ৯০টি ¤্রাে পাড়ায় তীব্র পানি সংকটে দেখা দিয়েছে। বহু দিন ধরে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিলেও বাধ্য হয়েই ঝিড়ির নোংরা পানি খেয়ে জীবনধারণ করছে তারা আর এতে পানিবাহিত নানারকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। তীব্র এই পানির সংকট না মিটলে পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবার কথা জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উপরে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের বিভিন্ন পাড়াতে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট লেগেইে থাকে। আর মার্চ-মে এই তিন মাস যেন পানির কষ্ট আরো বেড়ে যায় ¤্রাে পাড়াগুলোতে। দুর্গম কয়েক কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে ঝিড়ি থেকে খাবারের পানি সংগ্রহ করার অবিরাম চেষ্টা চালায় চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবারগুলো। তবে পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় নিদারুণ পানির কষ্টে এলাকার বাসিন্দারা এখন মানবেতর জীবনধারণ করছে। বিশুদ্ধ পানির কষ্টে এখন দিনযাপন করছে চিম্বুক পাহাড় এলাকার রামড়ী পাড়া, ¤্রলং পাড়া, বাগান পাড়া, বাইটা পাড়া, হেডম্যান পাড়া, যামিনী পাড়াসহ ৯০টি পাড়ার বাসিন্দারা।
সম্প্রতি চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সব পানির উৎস শুকিয়ে গেছে। কোথাও চলতে চলতে ঝিড়ির শেষ মাথায় গর্তে অল্প পানি জমা আছে, সেখান থেকেই বিভিন্ন পাড়ার বাসিন্দারা ময়লাযুক্ত পানি সংগ্রহ করছে।
জেলা শহর থেকে ১২কিলোমিটার দূরে ¤্রলং পাড়া, সেই পাড়ার বাসিন্দা রাংমে ¤্রাে বলেন, ঝিড়ি থেকে পানি আনতে আসা-যাওয়ায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। ভোর ৪টায় পানি আনতে গিয়ে সকাল ৬টার সময় পাড়ার ফিরে আসা যায়। দুই মগ পানি নেওয়ার পর আট মিনিট থেকে দশ মিনিট পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বয়স্ক নারীরা রাত দুটা তিনটার সময় পানি আনতে ঝিড়িতে চলে যায়। তিনি আরো বলেন, আমাদের পাড়ায় প্রচুর পানির কষ্ট। পানির কোন ভালো উৎস নেই, প্রাকৃতিকভাবে ঝিড়িতে কিছুটা পেতাম তবে গরমের কারণে ঝিড়িও শুকিয়ে গেছে।
রামরীপাড়ার বাসিন্দা পানলা ¤্রাে বলেন, পানির অভাবে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত নিয়মিত গোসল করা যায় না, যারা কাজে যায় যে যেখানে পানি পায় সেখানে গোসল করে আর ফেরার সময় অল্প পানি পেলে সেটাই নিয়ে বাড়িতে যায়।
রামরীপাড়ার বাসিন্দা প্রেনপ্রে ম্রো বলেন, চিম্বুক এলাকায় কম হলেও ১০হাজার মানুষ বসবাস করে কিন্তু তারা সুপেয় পানি পাচ্ছে না আর ময়লা পানি খেয়ে সারাবছরই নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই মারা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছে, নির্বিচারে পাহাড় থেকে বৃক্ষ ও পাথর নিধনের ফলে পাহাড়ের পানির উৎসগুলো দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর শুস্ক মৌসুম আসলে এর খেসারত দিতে হয় সাধারণ জনগণকে।
¤্রাে ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াং ঙান ¤্রাে বলেন, বান্দরবানের সবচেয়ে পানির কষ্টে এমন দুর্গম গ্রামগুলোতে। বিশেষ করে চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশের ¤্রাে জনগোষ্টি এখন পানির অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, একসময় ঝিড়িতে প্রচুর পানি থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে পানির অভাবে সবারই কষ্ট বাড়ছে। ¤্রাে ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াং ঙান ¤্রাে আরো বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্য শুধু পানির অভাবে ¤্রাে জনগোষ্ঠী চিম্বুক এলাকা থেকে অন্য জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হবে বলে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য সিং ইয়ং খুমী বলেন, বনাঞ্চল ধংস, ঝিড়ির পাথর উত্তোলন করে পানির উৎস ধংস করার কারণে প্রতিবছর চিম্বুক এলাকার প্রায় ৯০টি পাড়ার ¤্রাে সম্প্রদায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগে। পানির অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ব্যাহত হওয়ায় পাশাপাশি ফল-ফলাদি উৎপাদন কমে যাচ্ছে ।
রামরী পাড়ার কারবারী (পাড়া প্রধান) মেনরুম ¤্রাে বলেন, চিম্বুক এলাকার মানুষের এখন সবচেয়ে বড় কষ্ট পানি। নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার ও খাবার জন্য কোথাও পানি নেই। ফল বাগানে দেয়ার মত পানির অভাব।
সুত্রে জানা যায়, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ২০২১সালে বান্দরবানের আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ¤্রাে জনগোষ্ঠীর ৭জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছিল আর ২০২২ সালে থানচি উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরো ৮জন, আর নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল অসংখ্য পাড়াবাসী।
এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্টা আচার্য্য জানান, দুর্গম এলাকায় পাথরের কারণে টিউবওয়েল স্থাপন করা যায় না, সেখানে রিংওয়েল স্থাপন এবং যেসকল ঝিড়িতে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকে সেখানে বরাদ্ধ সাপেক্ষে জিএফএস পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, চিম্বুক এলাকাসহ বিভিন্ন দুর্গম এলাকার জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট