নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করেছে রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। আগামী বর্ষা মৌসুম ও পবিত্র ঈদ উল ফিতরের আগে রানীরহাট মুখ ও কাউখালী সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে খানা খন্দে ভরা সড়কটি সংস্কার হওয়ায় সাধারণ যাত্রী ও চালকরা খুবই খুশী। রানীরহাট মুল সড়ক থেকে কাউখালী পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ২৮ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা ব্যায়ে সড়ক উন্নয়ন কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কাজের গুণগত মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নুরীয়া।
কাউখালী সড়কে গাড়ী চালক মোঃ সালাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটি সংস্কার বিহীন ছিলো। রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে খানাখন্দে ভড়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল খুবই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। একটি ডেলিভারী রোগী আমরা পরিবহন করতে আমাদের কষ্ট পেতে হতো। গাড়ী যতোই আস্তে চালায়না কেন রাস্তাটির ভাঙ্গাতে পড়ে রোগী কষ্ট পেতো। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজটি করে দেয়া শান্তিতে গাড়ী চালাতে পারছি।
মোটর সাইকেল চালক সাইফুল ইসলাম বাবু জানান, এই রাস্তাটি এতোই খারাপ হয়ে গেছে যে অনেক যানবাহন দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। আমি নিজেও এই রাস্তায় চলতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করেছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বর্ষা মৌসুমের আগে এবং ঈদুল ফিতরের আগে রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কাজের গুনগত মান খুবই ভালো হয়েছে গাড়ী চলাচল করতে এখন আর কোন অসুবিধা হয় না।
উপজেলার সম্মুখে স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন এই সড়কটিতে বড়ো বড়ো গর্ত ছিলো। রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কল্যাণে আজ রাস্তাটি সংস্কার হয়েছে। এই রাস্তাটি যদি সংস্কার করা না হতো তাহলে চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটতো। আশা করছি এই রাস্তাটি সংস্কার করার ফলে যানবাহন চলাচল সহ সকলে সুবিধা ভোগ করবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মোঃ মাসুদ জানান, কাউখালী সড়কের ৩ কিলোমিটার রাস্তার যে সংস্কার কাজ করা হয়েছে তা খুবই মানসম্মত ভাবে করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সিলকোট কাজটি যতটুকু ধারা ছিলো তার চেয়ে বেশী আমাদেরকে করতে হয়েছে। এছাড়া কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুরোধে আমাদেরকে করে দিয়েছে। সড়কটি যে অবস্থায় ছিলো অন্য ঠিকাদার হলে ফেলে চলে আসতো। সম্মানিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুরোধ রাস্তাটিতে ম্যাকাডম করে রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করে তুলেছি। এখানে আমার অনেক লস যাবে তারপরও প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষার্থে এই কাজটি আমি সম্পন্ন করে জনগনকে সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছি। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিনের সুনাম অর্জনকরা প্রতিষ্ঠান ছোটখাট বিষয় নিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করতে চায় না। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমাদেরকে যেভাবে কাজটি করতে বলেছে আমরা চেষ্টা করেছি মানসম্মত ভাবে কাজ সম্পন্ন করতে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নুরিয়া বলেন, কাউখালী উপজেলার এই সড়কে সকলে সুফল ভোগ করছে। পবিত্র ঈদের আগে ও বর্ষা মৌসুমের আগে এই রাস্তাটি সংস্কার হওয়ায় সকলেই উপকৃত হয়েছে। সংস্কারের আগে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য ছিলো। সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়ার ফলে বর্তমানে যানবাহন চলাচল সহ সকল জনগন এই সুফল ভোগ করছে। এছাড়া কাউখালীর এই রাস্তাটি আরো প্রসস্থ হওয়ার কথা রয়েছে। রাস্তাটি প্রসস্থ হলে যানবাহন চলাচলে যেমন গতিশীলা আসবে তেমনি সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহমুদ আল নুর সালেহীন বলেন, সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশে অর্থ হচ্ছে সকল ক্ষেত্রে ভালো থাকা। একটি সড়ক যদি আমরা প্রতি বছর বড়ো আকারে কাজ করি তা সরাকরের বড় লস। তাই আমাদেরকে একটি সড়ক সচল রাখতে বর্ষার আগের আমাদের কিছু সিলকোট করতে হয়। যাতে যাস্তায় যে ফাটল ও খানা খন্দ গুলো রয়েছে তা ভরাট করে মেরামত করে দেয়া। অল্প টাকা দিয়ে এটি যদি আমরা করে দেই তাহলে রাস্তাটি ভালো থাকে। যদি বর্ষার আগে এটি করে না দেই তাহলে বর্ষার সময় ছোট গর্তটি বড়ে হয়ে একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই আমরা একটি রাস্তাকে এভাবে সিলাকোটের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫/৬ বছর ভালো রাখতে পারে। তা না হলে প্রতি বছর আমাদেরকে কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য। সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসাবে আমাদেরকে এই কাজটি করতে হয়। তিনি বলেন, রানীরহাট কাউখালী সড়কের তিন কিলোমিটার রাস্তাটি খুবই ভালো কাজ হয়েছে। আশা করছি বর্ষা মৌসুমে যাত্রী নিরাপদে যাতায়ত করতে পারবে।