দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলার আজ জন্মদিন। ১৯১৮ সালের আজকের এই দিনে (১৮ জুলাই) জন্মগ্রহণ করেন আশা ও ঐক্যের প্রতীক নেলসন ম্যান্ডেলা। দেশটির কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দীর্ঘ ২৭ বছর কারাবরণ করতে হয় ম্যান্ডেলাকে।দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের মেভেজো গ্রামের মাদিবা গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন ম্যান্ডেলা। তাঁর মায়ের নাম ননকাফি নসেকেনি এবং বাবা নকোসি মফাকানিসা গাদলা ম্যান্ডেলা। ১৯৩০ সালে ম্যান্ডেলার বয়স যখন ১২ তখন তাঁর বাবা মারা যান। ছোটবেলা থেকেই কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি। ক্লার্কবেরি বোর্ডিং ইনস্টিটিউটে জুনিয়র সার্টিফিকেট সম্পন্ন করে হিল্ডটাউনে যান। সেখানকার একটি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। ফোর্ট হেয়ারের একটি ইউনিভার্সিটি কলেজে স্নাতক শুরু করেন। তবে একটি ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে।
১৯৬২ সালে ম্যান্ডেলাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে। শেষ পর্যন্ত ১৯৮৯ সালে কারাবন্দী থাকার শেষ সময়টায় ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন।২৭ বছর কারাবাসের জীবনে ১৮ বছরই ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের কারাগারে। প্রায় তিন দশক পর ১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারিতে কারাগার থেকে মুক্ত পান তিনি। পরে ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন এই অবিসংবাদিত নেতা। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অহিংস প্রতিরোধে কাজ করেছেন নেলসন ম্যান্ডেলা। দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য এবং জাতিগত বিচ্ছিন্নতার অবসান চেয়েছিলেন তিনি। এমনকি কারাগারে থেকেও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
নেলসন ম্যান্ডেলা পরবর্তীকালে বর্ণবাদের অবসান এবং একটি বহুজাতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনায় এএনসির নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৩ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান ম্যান্ডেলা ও ডি ক্লার্ক। এক বছর পরে এএনসি দেশের প্রথম অবাধ নির্বাচনে বিজয়ী হয় এবং ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯৯৯ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেন।২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শান্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্বব্যাপী কাজ করে যান। ছবি : সংগৃহীত