এম এ সালাম বিশেষ প্রতিনিধিঃ বিকৃত ট্রান্সজেন্ডার মতবাদসহ পাঠ্যপুস্তক থেকে সকল অসংগতি দূর করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এদেশের ধর্ম, সমাজ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক ঘৃণ্য ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে উৎসাহিতকরণে একটি চিহ্নিত মহলের অপচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করছি। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য এদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, মিডিয়া ও তথাকথিত সুশীল সমাজ দীর্ঘদিন ধরে ট্রান্সজেন্ডারকে তৃতীয় লিঙ্গের মোড়কে উপস্থাপন করে মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। পাঠ্যবইয়ে আলোচিত শরীফার গল্পেও এরূপ বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। গত বছর আমরা পাঠ্যপুস্তকের অসংগতিসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরলে তিনি বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখার আশ্বাস দেন। তাঁর নির্দেশে বিতর্কিত দুটি বই প্রত্যাহার সহ বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট যেসকল বিষয় বাদ দেওয়ার প্রস্তাবনা পেশ করেছিলাম এর মধ্যে এই বিতর্কিত গল্প ও ট্রান্সজেন্ডারের বিষয়টিও ছিল। এ বছরের নতুন পাঠ্যপুস্তকে আবারো ট্রান্সজেন্ডার ও তৃতীয় লিঙ্গ বিষয়ক ধোয়াশাসহ আরো কিছু অসংগতি এবং ইসলাম, দেশ ও সমাজের আদর্শ পরিপন্থী নানা বিষয়বস্তুর সংযোজন আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। অবশ্য, জনসাধারণের দাবীর প্রেক্ষিতে পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কিত অংশের বিষয়ে সিদ্ধান্তে গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতি দ্রুত বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন আমাদের কিছুটা আশ্বস্ত করেছে। আমরা এজন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই এবং পাঠ্যবইয়ে থাকা বিকৃত ট্রান্সজেন্ডার মতবাদসহ ইসলাম আদর্শবিরোধী সকল বিষয় বাদ দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যমান সকল অসংগতি দূর করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্বাসবিরোধী ও মানব প্রকৃতিবিরুদ্ধ ট্রান্সজেন্ডার (লিঙ্গ রূপান্তর) মতবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আলেম উলামাদের এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি খতীববৃন্দকে জুম’আর খুতবায় ট্রান্সজেন্ডারের সাথে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) পার্থক্য সুস্পষ্ট করে ট্রান্সজেন্ডারের ধর্মীয় বিধান ও ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে জনসচেতনতা সৃষ্টির আহবান জানাচ্ছি। কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিঙ্গ রূপান্তরকরণ এবং সমকামিতা সমর্থন ও প্রচারে প্রকাশ্যে অথবা প্রচ্ছন্নভাবে কাজ করছে। এমনকি এর বিরুদ্ধে কথা বলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যেন এ বিকৃত মতবাদ এদেশে প্রচারিত না হয় এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থানকারীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়। অন্যথায় এদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা দাবী আদায়ে অতীতের মতো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।