1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বোয়ালখালীতে কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এডহক কমিটির অভিষেক সন্তান জন্মের প্রায় দুইমাস পর তথ্য গোপন করে মাতৃত্ব ছুটি নেওয়ার অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ঢাকায় আল্লামা সেহাবউদ্দীন খালেদ (রহঃ)-এর স্মরণে কনফারেন্স ১৯ এপ্রিল বর্ষবরণে পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ সমাজ কল্যাণ সংসদের বর্ণাঢ্য আয়োজন সৈয়দপুর বহুমূখী উচ্চ  বিদ্যালয়ের সভাপতি মোরর্শেদুল আলম নোয়াখালীতে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আজগর  বোয়ালখালীতে সম্মিলিত বর্ষবরণ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন বর্ণাঢ্য আয়োজনে বোয়ালখালীতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন বৈশাখ উৎসবকে ঘিরেই লোকজ মেলায় বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের আয়োজন  ‘পান্তা উৎসব’

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা ও বিশ্ব পরিবেশের অপরিহার্যতা -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪
  • ১৮০ বার পড়া হয়েছে

সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্যলীলার মধ্যে বৃক্ষরাজি অন্যতম; যা ছাড়া প্রাণিকুলের জীবন-জীবিকার কোনো উপায় নেই। সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বৃক্ষের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। বৃক্ষ পরিবেশ-প্রকৃতি ও জীবজগতের পরম বন্ধু। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বৃক্ষ। বন আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। জাতীয় অর্থনীতি, আবহাওয়া এবং জলবায়ুসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনায়নের গুরুত্ব অপরিসীম। বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও খরা প্রতিরোধে বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। বৃক্ষ ছাড়া আমাদের পৃথিবীতে বসবাস চিন্তা করা যায় না।
গাছ আমাদের পরম বন্ধুঃ পৃথিবীতে মানুষের খাদ্য, ওষুধ, বস্ত্র, ঘরবাড়ি তৈরি, মাটির ক্ষয়রোধ, আবহাওয়া ও জলবায়ু সঠিক রাখা, পরিষ্কার পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা, কৃষি জমির উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ সাধন ও বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ না থাকলে পৃথিবীর মধ্যে বন ও বন্যপ্রাণী থাকত না। বৃক্ষ আল্লাহ প্রদত্ত এক অমূল্য সম্পদ। তাই বৃক্ষহীনতা যে কোনো দেশের জন্য, যে কোনো জাতির জন্য অভিশাপস্বরূপ। গাছ ও পরিবেশের মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক অন্তর্নিহিত। গাছ আমাদের পরম বন্ধু; কিন্তু কতটুকু যত্নশীল বন্ধুর প্রতি আমরা? কোনো কারণ ছাড়াই অথবা সামান্য কারণ দেখিয়ে বন উজাড় করে ফেলি। একটা দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ অপরিহার্যঃ গাছপালা শুধু কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে উপকারের পরিসমাপ্তি ঘটায়, তা নয়। বড় বৃক্ষ বজ্রপাত প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য আজ প্রতিদিন বজ্রপাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। দেশে বজ্রপাত, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, পাহাড়ধস, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে। তাই ইচ্ছেমতো গাছ কাটা ও বনভূমি উজাড় করা ঠিক নয়। বনাঞ্চল না থাকলে প্রাকৃতিক পরিবেশ হয়ে উঠত উষ্ণ, পৃথিবী হয়ে উঠত মরুভূমি এবং মানুষের অস্তিত্ব হতো বিপন্ন। প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় বনায়নের বিকল্প নেই। আধুনিক সুরম্য অট্টালিকা আর ইট-কাঠের নগরজীবন সত্ত্বেও বনাঞ্চল ছাড়া মানুষের বাঁচার উপায় নেই। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ অপরিহার্য।
সামাজিক বনায়নের গুরুত্বঃ পৃথিবীতে লাখ লাখ প্রাণী ও উদ্ভিদের বসবাস হলেও গাছ কাটার কারণে গহিন অরণ্যের জীববৈচিত্র্য লোপ পাচ্ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘিœত করার জন্য মানুষই একমাত্র দায়ী, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিছু স্বার্থপর ব্যক্তি বন-জঙ্গল উজাড় করছে। যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মানুষের ঘরবাড়ি, চাষাবাদ ও শিল্পায়নের জন্য প্রচুর জমিজমা লাগছে। তাই বন-জঙ্গল কেটে এসব প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে।
ফলে পশুপাখি অন্ন ও বাসস্থান হারাচ্ছে এবং অন্য জীববৈচিত্র্য লোপ পাচ্ছে। পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা বাড়ছে। ফল-ফসল ও প্রাণহানি ঘটছে। এমন মহাবিপর্যয় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক বনায়ন একান্ত দরকার।
২৫ ভাগ বনভূমি থাকা বাঞ্ছনীয়ঃ বনাঞ্চল একদিকে নিসর্গে শোভা বাড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা পালন করছে। বনভূমি বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ ও শীতল রাখতে সাহায্য করে। যেখানে গাছপালা ও বনভূমি বেশি, সেখানে ভালো বৃষ্টিপাত হয়। ফলে ভূমিতে পানির পরিমাণ বাড়ে, চাষাবাদ ও ফসল ভালো হয়। তা ছাড়া গাছপালা মাটির উর্বরতা বাড়ায়, ভূমির ক্ষয়রোধ করে। ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যা প্রতিরোধেও গাছপালা সহায়তা করে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী গড়তে গাছ নিধন নয়, সৃজনই হোক সবার লক্ষ্য। একটি দেশের আয়তনের কমপক্ষে ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা বাঞ্ছনীয়।
বনজ সম্পদ সৃষ্টিতে নিয়োজিত দেশঃ বাংলাদেশে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট বনভূমির পরিমাণ প্রায় আঠারো শতাংশ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্র উপকূলবর্তী সুন্দর বন, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের বনভূমি, ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলা এবং রংপুর ও দিনাজপুরের কিছু অঞ্চল। সুন্দর বন বাদ দিলে বন বলতে যা অবশিষ্ট থাকে, তা খুবই নগণ্য।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের মতে, এর পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ অপেক্ষাকৃত ছোট দেশ। ২০১০ সালের শ্রমিক জরিপে দেখা যায়, মোট বেসামরিক শ্রমিক ৫৭.১ মিলিয়ন এবং এর মধ্যে বিশাল একটি অংশ বনজ সম্পদ সৃষ্টি কিংবা বনজ সম্পদনির্ভর উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। এক সময় বাংলাদেশের মোট ৬৪টি জেলার মধ্যে ২৮টি জেলায় কোনো বনায়ন কার্যক্রম ছিল না। এখন প্রায় সব জেলাতেই সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
বৃক্ষরোপণ সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হোক
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশে রয়েছে বনায়নের বিপুল সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাকে সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে। পরিকল্পিত একটি বাগানেই হতে পারে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আয়ের উৎস। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ গড়ে তুলতে হলে বৃক্ষরোপণকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।
ভারতে ১ জন মানুষের জন্যে প্রায় ২৮টি গাছ আছে
যুক্তরাজ্যে মাথাপিছু গাছের সংখ্যা ৪৩টি, চীনে ১৩০টি, ইথিওপিয়ায় ১৪৩টি, স্কটল্যান্ডে ৪০০টি, আমেরিকায় ৬৯৯টি, অস্ট্রেলিয়ায় ১২৬৯টি, ব্রাজিলে ১৪৯৪টি, কানাডায় ১০,১৬৩টি, আর রাশিয়ায় প্রত্যেক নাগরিকের জন্যে আছে ৬,৬১৪টি গাছ। বাংলাদেশের প্রতি চারজনের জন্য রয়েছে একটি পরিপক্ব গাছ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত অন্তত একটি করে গাছ লাগানো। বর্তমানে আমাদের প্রয়োজন প্রায় এক ট্রিলিয়ন বৃক্ষ রোপন করা। যদি সারা বিশ্বে বর্তমানে এক ট্রিলিয়ন গাছ লাগানো যায়, তাহলে এই সমস্ত গাছ পরিবেশ থেকে ২০০ গিগাটন কার্বন শোষণ করতে পারবে আর আমরা প্রায় ১০০ বছর আগের আবহাওয়া ফেরত পাবো।
লেখকঃ সভাপতি, ক্লিন বাংলাদেশ

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট