জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী:
নোয়াখালীতে জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করনীয় শীর্ষক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯ টার সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) জালাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের জেলা ব্যাবস্থাপক (নোয়াখালী) মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী মামুন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বলেন, মানুষের জন্ম এবং মৃত্যুর পর প্রয়োজন ইউনিয়ন পরিষদ। এই ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালত কার্যক্রম যদি সক্রিয় থাকে তাহলে সুবিধা বঞ্চিত মানুষ খুব সহজে সুবিচার পাবে। গ্রাম আদালতে অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে ন্যায় বিচার পাওয়া যায়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে গ্রাম আদালতের সেবা পেতে সহযোগিতা করতে হবে এবং ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গ্রাম আদালতের আইন ও বিধিমালা অনুসরণ করেই গ্রাম আদালত পরিচালনা করতে হবে। গ্রাম আদালতে মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। গ্রাম আদালতকে যাতে আরো গতিশীল করা যায়, সেজন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগের বিষয়টি দেখছি। ততোদিন পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ গ্রাম আদালতের পেশকারের দায়িত্ব পালন করবেন।
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিনাত রেহানা বলেন, বিচার করার ক্ষেত্রে আল্লার পরেই হচ্ছেন আদালতের একজন বিচারক। গ্রাম আদালতে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার করার ক্ষমতা পেয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ। তিনারা যাতে এই ক্ষমতা সঠিক নিয়মে ব্যাবহার করে। শালিশী ভাবে না করে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সঠিকভাবে মামলার নথী প্রস্তুত করতে হবে। উচ্চ আদালতে ৩০ লাখ মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে অনেক মামলা রয়েছে গ্রাম আদালতের এখতিয়ার ভূক্ত। গ্রাম আদালতের মামলা যাতে উচ্চ আদালতে না চলে যায় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
এ সময় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করেন প্রকল্পের জেলা ব্যাবস্থাপক মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী মামুন।
সভায় আরোও উপস্থিত ছিলেন জেলার সহকারী কমিশনারগণ, প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারীগণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণায়ের অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প। বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি ব্যাতিত দেশের ৬১ জেলার ৪৬৮ উপজেলার ৪৪৫৩ টি ইউনিয়নে এ প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ইপসা, ইএসডিও এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশন।