স্টাফ রিপোর্টার।
পটুয়াখালীর দুমকিতে এমপির দেয়া প্যারাডো গাড়ীতে চড়ে মোটর সাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী ড. হারুন অর রশীদ হাওলাদারের নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণ বিধি লঙ্ঘণে পদক্ষেপ গ্রহণের পরিবর্তে প্রকাশিত সংবাদের প্রমাণক চেয়ে সাংবাদিককে চিঠি দিয়েছে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং অফিসার যাদব সরকার গত বৃহস্পতিবার দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার দুমকি উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে ৩ ঘন্টা সময় দিয়ে এক চিঠিতে প্রকাশিত সংবাদের প্রমাণক দাখিলের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী-১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদারের ভাগ্নে দুমকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটর সাইকেল প্রতীকের চেয়ারপ্রার্থী ড. হারুন অর রশীদ হাওলাদারের পক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রকাশ্যে তিনি (এমপি) ভোট চান। এমনকি তার ব্যবহৃত (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৩-৪৩১২) নম্বরের প্যারাডো গাড়ীটিও তাকে নির্বাচনী প্রচারের জন্য দিয়ে দেন। বিআরটিএ তথ্যমতে গাড়ীটি নীলফামারী-৪ আসনের প্রায়াত এমপি লেঃকর্ণেল মারুফ সাকলাইনের নামে নিবন্ধিত। একজন প্রায়াত সংসদ সদস্যের নামে নিবন্ধিত গাড়িটি কিভাবে পটুয়াখালী-১ আসনের সাংসদ এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার ও তার পরিবারবর্গ গত ৬ মাস ধরে ব্যবহার করছেন এবং একই গাড়িটি মোটর সাইকেল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন অর রশীদ হাওলাদারের নির্বাচনী প্রচারণায় কেন ব্যবহার করছেন এ তথ্য অনুসন্ধানের পরিবর্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রমাণক চেয়ে উল্টো সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে চিঠি দেয়া হয়।
সংবাদে রিটার্নিং কর্মকর্তা যাদব সরকারের বক্তব্য জানতে চাইলে উল্টো তিনি ফোন কেটে দিয়ে আধাঘন্টা পরেই ৩ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়ে প্রমাণক চান। দ্রুত প্রমাণক চাইতে গিয়ে প্রথমেই চিঠিতে নাম বাদ দিয়ে শুধু ফোন নাম্বার দিয়ে চিঠি দেয়া হয়। যদিও পরে আবার সংশোধন করে দেয়া হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিক দেলোয়ার জানান, গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে ঘটনার পূর্বাপর বিশ্লেষণ করে জনগণ ও প্রশাসনকে সর্তক করাই তার কাজ এবং একই সঙ্গে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তিনি জেলা রিটার্নিং অফিসারকে অনুরোধ করেন। চিঠির জবাবে আরও বলা হয় এটা না করলে জনমনে যে প্রশ্নের জন্ম হয়েছে তা নিরসন হবে না, একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুষ্ঠু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের যে অঙ্গীকার তাও ব্যাহত হবে।
সংসদ সদস্যের গাড়ি ব্যবহার প্রসঙ্গে হারুন হাওলাদারের কাছে কোনো চিঠি দিয়েছেন কিনা এমন তথ্য জানতে ফোন দেয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন এরপর একাধিক বার ফোন করলেও রিসিভ করেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকারের এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক গণমাধ্যম কর্মীসহ দুমকীর সচেতন মহল। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন কতোটা সুষ্ঠু হবে এ নিয়ে চিন্তিত অন্যান্য প্রার্থী সমর্থকরা।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীরা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট একাধিক লিখিত অভিযোগ ও থানায় এজাহার করেও কোন ব্যবস্থা পায়নি এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরং অভিযোগ করায় উল্টো মারধর হুমকি ধামকি এমনকি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জীবন নাশের হুমকি দিলে তিনি সরাসরি নলেন আমি ও আমার কর্মীরা শংঙ্কায় আছি আমার জীবন নাশের শংঙ্কা রয়েছে। যদি আমার মৃত্যু হয় সেজন্য একমাত্র হারুন অর রশিদ হাওলাদার দায়ী। এতো কিছুর পরও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দুমকি উপজেলা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা নিরপেক্ষ নির্বাচন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে কোন আইমগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। অথচ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় রশাসন একজন প্রার্থী বিরুদ্ধে আচরনবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকা সত্বেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রার্থী সমর্থকরা শংঙ্কায় ভুগছেন বলে জানান।
এমত অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে সকলের অনুরোধ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এমপির প্রভাবে প্রভাহিত হচ্ছে এবং হারুন অর রশিদ হাওলাদার এর পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন। নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠু করতে হলে অবশ্যই এর প্রতিকার করা উচিত বলে মনে করছেন প্রার্থী সমর্থকরা।