এস আল-আমিন খাঁন পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেলো অস্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
বুধবার (১০-মে-২০২৩ ইং) তারিখ দুপুরে উপজেলার গোলগালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বড় গাবুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বর ও কনের অভিভাবকদের মোট ৩২ (বত্রিশ) হাজার টাকা জরিমানা ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করার মুসলেকা নেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে, স্থানীয় সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন গোলখালী ইউনিয়নে মাদ্রাসা পড়ুয়া অস্টম শ্রেণির ছাত্রীর বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে।সকাল থেকেই কনের বাড়িতে বিয়ের গেইট, শামিয়ানা ও রান্নাবান্না সহ উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করে সুশীলন এনজিও প্রতিনধি, পুলিশ ও আনসার নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। সেখানে উপস্থিত কনের পিতাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে থাকা নুর ইসলাম এর মাধ্যমে জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করে বিয়ের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়। এসময় ইউপি সচিব রমিজ উদ্দিন এর মাধ্যমে জানাযায় মাহাবুব নামের একজনের জন্মনিবন্ধনের কোড নাম্বার ব্যবহার করে ঐ শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ বানিয়ে দেয়া হয় ৫০০ টাকার বিনিময়ে।
পরে বর ও কনের পিতাকে বাল্যবিবাহের সহযোগিতা / সম্পাদনা করার জন্য বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী ভ্রাম্যমান আদালতে, কনের পিতাকে-১০ হাজার, বরের পিতাকে- ১৫০০ হাজার ও বরকে ৭ হাজার সর্বমোট ৩২ (বত্রিশ) হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ওই ছাত্রী প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়া হবে না— তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে এ মর্মে বর ও কনের অভিভাবকদের নিকট হতে মুচলেকা নেয়া হয় ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, বাল্যবিবাহ বেআইনি এতে অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। বাল্যবিবাহ মাতৃ মৃত্যু, নারী নির্যাতন ইত্যাদির প্রধান অনুঘটক।বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে ওই গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বাল্যবিবাহের শিকার শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চালিয়ে নিতে উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়াও তথ্য সেবায় চাকরি করে জাল জন্ম সনদ প্রদান করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন বলেন, আমরা সব সময় বাল্যবিবাহ থেকে বিরত থাকার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সকল ইউপি সদস্য সহ এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে মাসিক মিটিং ও উঠান বৈঠকে সচেতনতামুলক আলোচনা করা হয়। এরপর এধরনের বাল্যবিবাহ দেয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।