জাহিদ খান,জেলা প্রতিনিধিঃ
বেসরকারি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় বেসরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সারা দেশের ন্যায় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করে হামলার নিন্দা জানান।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, এতে দুইজন শিক্ষক আহত হন। এই ঘটনাকে অমানবিক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষকরা দাবি করছেন, সরকারি শিক্ষকদের মতো তারাও ন্যায্য সুবিধা পাওয়ার অধিকারী, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
আজ (২৭ ফেব্রুয়ারি) কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বেসরকারি শিক্ষকদের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, “শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর। অথচ তারা রাস্তায় নেমে ন্যায্য অধিকার চাইতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক।”
সংগঠনের সদস্য সচিব ওমর ফারুক শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, “এই আন্দোলন চলবে যতক্ষণ না শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার পান।”
বিক্ষোভে একাত্মতা ঘোষণা করেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরাও। ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ বলেন, “শিক্ষকদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করে শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
কচাকাটা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুজ্জামান ও ডায়নার পার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেলাল হোসেন বলেন, “যদি শিক্ষকদের দাবিগুলো যথাযথভাবে পূরণ না করা হয়, তবে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।”
বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব সিব্বির আহমেদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন গাগলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খায়রুল ইসলাম।
এদিনের কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন সাপখাওয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক দুদু, নন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল হক ও আবু তালেবসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দ্রুত তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আরও বড় আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।