চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নের তালিকা ঘোষনা হওয়ার পর চকরিয়া-পেকুয়ায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কক্সবাজার-১(চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে জনপ্রিয় এমপি জাফর আলমের পরিবর্তে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহামদের নাম ঘোষনা হওয়ায় চকরিয়া-পেকুয়ায় জাফর সমর্থিত নেতা কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিক্ষোভ।
গতকাল রবিবার(২৬ নভেম্বর) বিকেলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নের তালিকা ঘোষনা করার সময় কক্সবাজারের এই আসনটিতে সালাহ উদ্দিন আহামদের নাম ঘোষণা করেন।
কেন্দ্র থেকে সালাহউদ্দিন আহমদের নাম ঘোষণার পরপরই চকরিয়া- পেকুয়ায় এমপি জাফর আলম সমর্থিত নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উঠেছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম বি.এ(অনার্স) এম.এ। তাঁকে দলের মনোনয়ন না দেওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে চকরিয়া পৌর শহরের থানা রাস্তার মাথার সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্স চত্বরে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন জাফর আলমের সমর্থকরা।
মিছিলে তাঁরা ‘চকরিয়া-পেকুয়ার মাটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি, জাফর ভাইয়ের ঘাঁটি’, ‘জাফর ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
মনোনয়ন না পাওয়ার খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার এই কর্মসূচি থেকে জাফর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও ঘোষণা দেন জাফরের স্ত্রী শাহেদা জাফর।
শাহেদা জাফর বলেন, ‘গত ২৫ বছর ধরে চকরিয়া-পেকুয়ার রাজপথে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে, জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জাফর আলম। এ আসনে এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যার পক্ষে কোনো জনগণ নেই,জনগনের সমর্থনও নেই।
বিএনপির প্রার্থীর কাছে তিনবার পরাজিত হয়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন সেই প্রার্থী। ইনশাআল্লাহ আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও খেলা হবে। সেই খেলায় চকরিয়া-পেকুয়ার জনগণ বর্তমান এমপি জাফর আলমকে বিপুল ভোটে আবার নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবে। আর জনবিচ্ছিন্ন সালাহউদ্দিন আবারও ঘরে ঢুকে যাবে।’
এদিকে শহরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় টহল দিতে দেখা গেছে।
এদিকে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তাৎক্ষণিক কর্মসূচিকে ঘিরে চকরিয়া পৌর শহরে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।’
মনোনয়ন পাওয়া সালাহউদ্দিন আহমদ এর আগে তিনবার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। গত নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। এবার তাঁকে আবার সুযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে জাফর আলমের পক্ষে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন, চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরী, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীসহ জাফর আলমের ভক্ত ও সাধারণ জনগন। এ সময় ওই এলাকা জাফর আলম সমর্থিত হাজার হাজার সাধারণ জনতা স্লোগানে স্লোগানে মূখরিত করে তোলে।