মাত্র এক দশকেই ধনী দেশে পরিণত হবে আফগানিস্তান। এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে খোদ যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের জরিপ বলছে- দেশটির রুক্ষ মাটির নিচে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের প্রকৃতিক সম্পদ। এগুলো যদি সঠিকভাবে উত্তোলন করা যায়- তাহলে মাত্র এক দশকেই উন্নত দেশের কাতারে উঠে আসবে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। ইসলামি আমিরাতের মাটির নিচে রয়েছে- লিথিয়ামের মতো মহামূল্যবান খনিজ সম্পদ। আর এই লিথিয়ামকে বলা হচ্ছে আগামী বিশ্বের চালিকাশক্তি। দিন যতই যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় নানা যন্ত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ ততই বাড়ছে। বিশেষ করে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি। আর এসব স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের শক্তি সংরক্ষণের জন্য দরকার লিথিয়াম। তাই এই লিথিয়ামকেই ভবিষ্যতের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প বলে মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের উষর মাটির নিচে রয়েছে লিথিয়ামের বিশাল ভাণ্ডার।
২০১০ সালে ভূতাত্বিকদের মূল্যায়ণ নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন। যেখানে লিথিয়ামের বিপুল মজুদের জন্য আফগানিস্তানকে আগামীর সৌদি আরব বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
ইসলামের পূণ্যভূমি সৌদি আরব যেমন অপরিশোধিত তেলের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে ধনী দেশ হয়ে উঠেছিল, লিথিয়ামের মাধ্যমে আফগানিস্তানও মাত্র এক দশকেই সমৃদ্ধ দেশ হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয় পেন্টাগনের ওই রিপোর্টে। ধারণা করা হচ্ছে— খনিজ আকারে মাটিতে থাকা এই রাসায়নকি যৌগ লিথিয়ামের মাধ্যমে বলিভিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে কাবুল। নাসা পরিচালিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে অব্যবহৃত লিথিয়াম খনিগুলোর মূল্য আনুমানিক এক ট্রিলিয়ন ডলার। যা দেশটির অর্থনীতিকেই বদলে দিবে।
আফগানিস্তানের লিথিয়াম খনি হেরাত থেকে নুরিস্তান প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত বলে জানা গেছে। যার দৈর্ঘ্য ৯০০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২০০ কিলোমিটার। ধারণা করা হচ্ছে, এই লিথিয়াম খনিগুলোর জীবনকাল প্রায় ৭০ বছর। কিন্তু আফগানিস্তানের জন্য মূল্যবান এই প্রাকৃতিক সম্পদ বড় ধরনের হুমকি তৈরি করতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে। কারণ, দ্বিতীয় মেয়াদে তালেবান দেশটির শাসন ক্ষমতায় থাকলেও এখনো নানা দল-উপদল ও গোষ্ঠীটিতে বিভক্ত আফগানিস্তান। খনির দখল নিয়ে এসব গোষ্ঠী রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হলে মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে মূল্যবান এই সম্পদ।