এস আল-আমিন খাঁন, বরিশাল ব্যুরো।
পটুয়াখালীর দুমকিতে হালিমা আক্তার মিম(২০) নামের এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার মূলহোতা আরিফ হোসেন সিকদারকে(৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত রবিবার (১১”জুন) ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকৃত আরিফের বাড়ি উপজেলার লেবুখালি ইউনিয়নের কার্তিক পাশা গ্রামে। সে নিহত হালিমা আক্তার মিমের সম্পর্কে চাচাতো দুলাভাই এ ঘটনা ঘটায়। এ পর্যন্ত মীমের শাশুড়ী ও আরিফ সিকদার সহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃত আরিফের ভাস্যমতে এই পরিকল্পনা হালিমা আক্তার মীমের মূলত, তার ইচ্ছে ছিলো গায়ে আগুন লাগানোর নাটক সাজিয়ে ডাক চিৎকার দিলে মানুষ এগিয়ে আসবে, যাতে করে নিজের (হালিমা আক্তার মিমের) কোনো ক্ষতি হবে না। পরে স্বামী ও শাশুড়ীকে ফাঁসিয়ে মামলা দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো। সবাইকে বলবে স্বামী ও শাশুড়ী আমাকে হাত পা বেঁধে আগুন লাগিয়ে আমাকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিলো। এরপর স্বামীকে ডিভোর্স দিবে বলেও জানান। তার পাতানো খেলা অন্যরকম হলেও মৃত্যু হয়ে গেলো হালিমা আক্তার মিমের।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।।।।, এর সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। আমাদের তদন্ত কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার সাতানী গ্রামের জামাল হোসেন প্রিন্স- তার স্ত্রী হালিমা আক্তার মিম ও ছেলে ওয়ালিফ ইসলাম জিসানকে নিয়ে পারিবারিক কলহ এড়াতে গত ২জুন উপজেলার নতুন বাজার এলাকার শাহজাহান মুন্সীর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার (৮জুন) দুপুরের খাবার খেয়ে ওই বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হালিমা ও তার ছোট ছেলে জিসান। অপরদিকে জামাল হোসেন দুপুরের খাবার খেয়ে কর্মস্থলে চলে যান। বেলা তিনটার দিকে হঠাৎ হালিমার ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ পান।
পরে তাঁরা ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শাড়ি ও ওড়না দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হালিমা এবং তার শিশু জিসানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাদের ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে হালিমা মারা যায়। দগ্ধ শিশু সন্তান জিসান সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওই রাতেই বাদি হয়ে হালিমার মামা ওমর ফারুক দুমকি থানায় একটি মামলা দায়ের করলে হালিমার শ্বাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে পুলিশ ওই দিনই আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।