রবিউল হাসান, সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে ঘরে ঢুকে চুরি করার সময় চোরকে চিনে ফেলায় ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিনগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত বৃদ্ধের নাম সেতারা বেগম(৭০)। তিনি সোনাপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কালিকাপুর ওসমান আলী হাজী বাড়ির মৃত মোফাজ্জল হকের স্ত্রী। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে একা একা বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করে আসছেন। তার সাথে কারো কোনো বিরোধ নেই, কারা এত বড় নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, আমাদের বুঝে আসে না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক নিহতের এক আত্মীয় কান্নারত কন্ঠে বলেন, এ দেশে মনে হয় আইন প্রশাসনের কোন বলয় নেই। যেখানে সেখানে হত্যা, চুরি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুনখারাপি বেড়েই চলছে। এর প্রতিকার কি আর কোনদিন আমরা পাব? পাব না—এই বলে তিনি চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেন।
নিহতের ছেলে নোমান জানান, আমরা ভাই বোন সবাই কর্মব্যস্ততার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া করে থাকি। আমার মা বাড়িতে একা থাকে। তিনি প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক ৪টার দিকে এক বা একাধিক চোর আমাদের বাড়িতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকে। সম্ভবত এসময় চোর ঘরে ঢোকার শব্দ শুনে আমার মা জেগে উঠে চিৎকার করার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে পালিয়ে যায়।
“পরবর্তীতে শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টায় আমার মাকে প্রতিবেশীরা ডাকতে আসলে তারা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাটের উপরে পড়ে থাকতে দেখে। চিৎকার করলে আশপাশের লোক এসে দেখে আমার মাকে জবাই করে দুর্বৃত্তরা ফেলে রেখে যায়। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
বৃদ্ধা হত্যাকে কেন্দ্র করে পরিবার ও এলাকাবাসীর ভিতরে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই নির্মম ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বৃদ্ধের পরিবার এবং সমাজের বিশিষ্টজনেরা।
সোনাইমুড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাস্থলে আমিসহ জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন। আমরা এই বিষয়ে সারেজমিন পরিদর্শন করেছি এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত