মোহাম্মদ আনিছুর রহমান ফরহাদ, ব্যুরো চীফ
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যয় নির্বাহে স্বনির্ভরতা গড়তে হলে রাজস্ব আদায়ে আরও মনোযোগী হতে হবে। একই সঙ্গে কর দিতে গিয়ে যেন কোনো নাগরিক হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
আজ বৃহস্পতিবার চসিক পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে রাজস্ব বিভাগের কর আদায়কারী ও অনুমতিপত্র পরিদর্শকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় মেয়র রাজস্ব বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা—সবই এই রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। আপনাদের প্রতিটি পরিশ্রম নগরবাসীর কল্যাণে কাজ করে। আপনাদের প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা ছাড়া উন্নয়ন ব্যাহত হবে।”
তিনি বলেন, “নগরবাসী কর দেন, যাতে তাদের সন্তান একটি ভালো স্কুলে পড়তে পারে, তাদের পাড়ার রাস্তাটি মেরামত হয়, বা একটি উন্নত সেবা পায়। তাই এই রাজস্ব সংগ্রহে আপনাদের আন্তরিকতা, সদাচরণ ও পেশাদারিত্ব অপরিহার্য।”
রাজস্ব আদায়ে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, ধনী ও প্রভাবশালী কেউ কর ফাঁকি দিতে চায় বা আদায় ঠেকাতে চাপ দেয়। আমি স্পষ্টভাবে বলছি—কেউ যত বড় প্রভাবশালীই হোক, রাজস্ব আদায়ে বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা আইন মেনে কাজ করুন, আমি আপনাদের পাশে থাকব।”
মেয়র আরও বলেন, “রাজস্ব আদায় শুধু আদেশ দিয়ে হয় না, জনগণকে বুঝিয়ে, যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হয়। হোল্ডিং ট্যাক্স না দিলে ভবিষ্যতে তারা হয়রানির শিকার হতে পারেন—এই বাস্তবতা জানাতে হবে। কনভিন্স করে, সহযোগিতা করে কর আদায় করতে হবে।”
সভায় মেয়র জানান, “চসিক হোল্ডিং ট্যাক্স ব্যবস্থাকে অটোমেশন করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এই ট্যাক্স আদায় অনলাইনেই সম্পন্ন হবে, যা আরও স্বচ্ছতা ও নাগরিক-সুবিধা নিশ্চিত করবে।”
মেয়র রাজস্ব কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আগামী ২৩ জুন বাজেট পেশ করা হবে। হাতে আছে মাত্র ১০–১১ দিন। এই সময়ে রাজস্ব আদায়ে সুসংগঠিত কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। টার্গেট অনুযায়ী কাজ করুন। প্রয়োজনে আমাকে কাজে লাগান। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের রাজস্ব বাকী আছে আমি ফোন করব, প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াব। একসাথে কাজ করলে আমরা সিটি কর্পোরেশনকে ঋণমুক্ত ও কার্যকর একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।”
মেয়র আরও বলেন, “রাজস্ব সংগ্রহের দায়িত্ব শুধু একটি আর্থিক কাজ নয়, এটি একটি আস্থার জায়গা। আপনি সকালে বেরিয়ে যান, সারা দিন কাজ করেন—এটি বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেই বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, কর আদায়কারী ও অনুমতিপত্র পরিদর্শকবৃন্দ এবং মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ)।
লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ সম্পাদিত ও হাজী জসিম উদ্দিন প্রকাশিত