1. info@www.dainikdeshbarta.com : bissho sangbad Online : bissho sangbad Online
  2. info@www.dainikdeshbarta.com : Dainik Desh Barta :
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে বোয়ালখালীতে মিষ্টি বিতরণ পীরে ত্বরিকত হযরত শাহ্সুফি মাওলানা সৈয়্যদ আরাফাতুল হক হাফেজ নগরী মাইজভান্ডারী’র ২তম বার্ষিক ওরশ শরীফ সম্পন্ন “পরিবারের চার ভাই সকলেই হলেন সিআইপি” প্রবাসে সবজি চাষে পটিয়ার  নাজিম উদ্দিনের সফলতা।  -আলমগীর আলম। কবি ইকবাল ও বাহাদুর শাহ জাফরের জাগ্রত চেতনায় সাহিত্য-দর্শনের উন্মেষ মাওলানা আবু নাছের জিলানীর মুক্তির দাবিতে কধুরখীল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ গণসংযোগ রূপ নিয়েছে গণ-সমাবেশে শফিকুল ইসলাম রাহী’র লিফলেট বিতরণ বোয়ালখালীতে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত এক যুবক চট্টগ্রাম-১৪ আসনে চন্দনাইশে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে বিএনপির প্রার্থী হতে চায় এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) পার্লামেন্টের সদস্য অ্যাবিগেল বয়েড। ঢাকায় এভারগ্রীন ৯৪ এর ১ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও মিলন মেলা অনুষ্ঠিত

যমুনা অয়েল ফতুল্লা ডিপোর ডিজেল ডিপোতেই রক্ষিত : ট্যাংকের ক্যালিব্রেশনে পরিমাণে কিছুটা তারতম্য ও তথ্য বিভ্রাট

  • প্রকাশিত: রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২১০ বার পড়া হয়েছে

আসিফ ইকবালঃ

যমুনা অয়েলের ফতুল্লা ডিপোর ডিজেল ডিপোতেই রক্ষিত আছে। এই ডিপো হতে কোন ডিজেল গায়েব হয়নি। ট্যাংকের ক্যালিব্রেশনের কারণে যে পরিমান হেরফের দেখা যাচ্ছে, তা ডিপোতেই রয়েছে। সম্প্রতি ফতুল্লা ডিপো থেকে ডিজেলের পরিমাণ নিয়ে ত্রুটি চোখে পড়ার পর তেল সংশ্লিষ্টরা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, পাইপলাইনে শিনকেস, মিটারে যান্ত্রিক ত্রুটি তাপমাত্রা জণিত সমস্যায়ও তেলের পরিমাণে তারতম্য হতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাইপলাইনে চট্টগ্রাম হইতে নারায়ণগঞ্জ এর গোদনাইল এবং ফতুল্লাতে অবস্থিত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানীর ডিপোগুলোতে টেস্ট এবং ট্রায়াল বেসিসে ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে। ডিজেল সরবরাহ করতে গিয়ে সব ডিপোতেই কম বেশী শর্ট দেখা যাচ্ছে। এগুলো পাইপলাইনে শিনকেস, মিটারে যান্ত্রিক ক্রুটি তাপমাত্রা ট্যাংকে ক্যালিব্রেশনের কারণে তারতম্য হতে পারে। যদিও একটি মহল বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন প্রজেক্ট সরকারের জালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অগ্রাধিকার প্রকল্প। চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন প্রকল্প (সিডিপিএল) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। জুন ২০২৫ হতে সিডিপিএল এবং পিটিসি পিএলসি এর মাধ্যমে পাইপলাইনে চট্টগ্রাম হইতে নারায়ণগঞ্জ এর গোদনাইল এবং ফতুল্লাতে অবস্থিত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানীর ডিপোগুলোতে টেস্ট এবং ট্রায়াল বেসিসে ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে। ডিজেল সরবরাহ করতে গিয়ে সব ডিপোতেই কম বেশী শর্ট দেখা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এগুলো পাইপলাইনে শিনকেস, মিটারে যান্ত্রিক ক্রুটি তাপমাত্রা ট্যাংকে ক্যালিব্রেশনের কারণে তারতম্য হতে পারে। তেলের পরিমাণ নিয়ে ক্রুটি চোখে পড়লেও সেগুলো ট্যাংকেই রয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

সূত্র জানায়, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিঃ এর দ্ইুটি ট্যাংক যথাক্রমে ট্যাংক নং- ২২ এবং ট্যাংক নং- ২৩ পাইপলাইন প্রকল্পের সহিত সংযুক্ত। ট্যাংক নং ২২টি ছিল পুরনো ট্যাংক। যা ব্যুরো ভেরিটাসের পরামর্শে কোম্পানীর নিয়োগকৃত ঠিকাদার মেসার্স আরিয়ানা ট্রেডার্স, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম এর মাধ্যমে মেরামত করে মেসার্স এসএম নুরুল হক, হাউজ নং সি/২২ রোড নং- ১৭৩, খালিশপুর, হাউজিং এস্টেট, খুলনা- ৯০০০ (বিএসটিআই লাইসেন্স নং- এমসি-০৪) মার্চ ২০২৫ এ নতুন করে ক্যালিব্রেশন করা হয়। ট্যাংক নং- ২৩ টি মেসার্স মজুমদার এন্টারপ্রাইজ চট্টগ্রামের মাধ্যমে নির্মান করা হয়।

জানা গেছে, গত ২৫ জুন সিডিপিএল এবং পিটিসি পিএলসি সমন্বয়ে টেস্টিং এবং ট্রায়াল বেসিসে চট্টগ্রাম টার্মিনাল হতে যমুনা ফতুল্লা ডিপোতে ২২ ও ২৩ নং ট্যাংকে ডিজেল সরবারহ করা হয়। যেটি বিপিসি নিযুক্ত সার্ভেয়ারের মাধ্যমে তৈল নিরুপন করা হয়। তৈল নিরুপনে পিটিসি পিএলসি, বিপিসির সার্ভেয়ার এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর অফিসারে যৌথ স্বাক্ষরে তা নিরুপন করা হয়। ২২ নং ট্যাংকের তেল খালাসের সময় নতুন ক্যালিব্রেশন অনুযায়ী কিছুটা তারতম্য বা গড়মিল দেখা যায়। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২য় পর্যায়ে সিডিপিএল এবং পিটিসি পিএলসি সমন্বয় ট্যাংক নং-২২ এবং ২৩ এ ডিজেল সরবরাহ করা হয়। এই অবস্থায় ১ম ও ২য় পাম্পপিং পরবর্তী হিসাব নিরুপনে জানা যায়, অধিক পরিমান তেলের পার্থক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ২২নং ট্যাংকে পুরাতন ক্যালিব্রেশন (মার্চ ২০২৫ এর আগে) নতুন ক্যালিব্রেশন চার্ট (মার্চ ২০২৫ এ ট্যাংক মেরামত করার পর) পর্যালোচনা করে আনুমানিক প্রায় ৬০,০০০ লিটারের ক্রুটিচোখে ধরা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিপো কর্তৃপক্ষ পাইপলাইন সংশ্লিষ্ট ২২নং এবং ২৩নং ট্যাংক রি-ক্যালিব্রেশন করার জন্য প্রধান কার্যালয় বরাবর পত্র প্রদান করে।

সূত্র জানায়, ডিপো কর্তৃপক্ষের রি-ক্যালিব্রেশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিঃ কর্তৃপক্ষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর ট্যাংক নং ২২ এবং ২৩ রি-ক্যালিব্রেশন করার জন্য সিডিপিএল, পিটিসি পিএলসি এবং কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। ক্যালিব্রেশন প্রতিষ্ঠান মেসার্স কর্নফুলী ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম (আবুল মনজুর-স্বত্ত্বাধিকারী) এর মাধ্যমে কমিটির উপস্থিতিতে ট্যাংক নং ২২ এবং ২৩ রি-ক্যালিব্রেশন করা হয়। যাহা বিএসটিআই কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

ডিপো সংশ্লিষ্টরা জানান, এই ক্যালিব্রেশন চার্ট পাওয়ার আগেই কেউকেউ তেল গায়েব হয়ে গেছে বলে প্রচার করছে। যেটি আদৌ সত্য বা প্রমাণিত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রি-ক্যালিব্রেশন চার্ট পাওয়া গেলেই বুঝা যাবে, গড়মিল থাকা তেল কোথায় আছে বা সেগুলো কোথায় গেল। ডিপো সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের এই ডিপো থেকে কোন প্রকার ডিজেল গায়েব হইনি। সব অভিযোগ রি-ক্যালিব্রেশন চার্ট পাওয়ার পর মিথ্যা বলে প্রমানিত হবে। ফতুল্লা ডিপো হতে ২২নং ট্যাংকের ক্যালিব্রেশনের কারণে যে পরিমান হেরফের হচ্ছে, তা ডিপোতেই রক্ষিত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিজ্ঞতার আলোকে এ প্রতিবেদককে জানান।

জানা গেছে, ট্যাংকে তেল মজুত শুরুর আগে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে সক্ষমতা যাচাই করে (ক্যালিব্রেশন) সনদ নিতে হয়। এটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর আবার যাচাই করে নবায়ন করতে হয়। তেল কোম্পানির হয়ে কাজটি করে দেয় বেসরকারি কিছু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ফতুল্লা ডিপোর ট্যাংক দুটিই ডিজেল রাখার ট্যাংক। এর মধ্যে ২২ নম্বর ট্যাংকে ২০১৮ সালে ও পরে ২০২৫ সালে যাচাই করা হয়েছে। ২০১৮ সালের সক্ষমতা সনদ বলছে, ২২ নম্বর ট্যাংকে ২ হাজার মিটার গভীরতায় তেল ধারণক্ষমতা ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ লিটার। আর ১২ হাজার ১৪০ মিটার গভীরতায় ধারণক্ষমতা ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৭ লিটার। এ বছর নতুন করে সক্ষমতা যাচাই করে একই ঠিকাদার। এতে বলা হয়, ট্যাংকে ২ হাজার মিটার গভীরতায় ধারণক্ষমতা ১২ লাখ ২৮ হাজার ৮৪০ লিটার। আর ১২ হাজার ১৪০ মিটার গভীরতায় ধারণক্ষমতা ৭২ লাখ ৮ হাজার ১২৯ লিটার। অর্থাৎ, মজুত ক্ষমতা কমে গেছে ৫৮ থেকে ৫৯ হাজার লিটার। তবে ২৩ নম্বর ট্যাংক নতুন বলে এটির সক্ষমতা তুলনা করা যায়নি।

পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিকদের ধর্মঘট

এ বিষয়ে মেসার্স এস এম নুরুল হকের স্বত্বাধিকারী আন্দালিব বিন হক বলেন, সক্ষমতার ক্ষেত্রে তারতম্য হতেই পারে। ৬০ হাজার লিটার কমার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত নন জানিয়ে বলেন, এটি মুদ্রণজনিত ভুল হতে পারে। যেহেতু রি-ক্যালিব্রেশন হচ্ছে, একইসাথে তদন্তও হচ্ছে, তাই এটা নিয়ে শংকা থাকা বা অপপ্রচার করা উচিৎ হবে না। এতে করে তৃতীয় পক্ষ সুবিধা নিতে পারে।
সূত্র মতে, তেলের পরিমাণগত পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর আরেকটি চিঠিতে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এতে পাইপলাইন কোম্পানির একজনকেও রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য যমুনা অয়েল কোম্পানির এজিএম (ইএন্ডডি) মো. আলমগীর আলম বলেন, তারা ইতিমধ্যে ফতুল্লা পরিদর্শন করেছেন। সবকিছু যাচাই বাছাই করে দেখছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে তিনি জানান।

যমুনা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুস্তফা কুদরত-ই ইলাহী গণমাধ্যমে বলেছেন, অভিযোগ তদন্তে কমিটি করেছেন। তারা সবপক্ষের সাথে কথা বলে এবং সব কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবেন। তার আলোকেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

যমুনা অয়েল কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত কমিটিতে বিশেষজ্ঞ লোকজন রয়েছেন। ইচ্ছে করলেই একজন কর্মকর্তা ভুল বুঝিয়ে কিছু করতে পারবেন না। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ক্যালিব্রেশনে গোলমাল হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে ৭০ লাখ লিটারের মতো জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এই তেলের সিংহভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) তেল আমদানির পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। বিপিসি ১৫ লাখ টনের কম ক্রুড অয়েল এবং বাকিটা রিফাইনড অয়েল আমদানি করে। আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা হয়। বিপিসির আমদানিকৃত সব তেল পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েল এবং মেঘনা পেট্রোলিয়ামের মাধ্যমে বাজারজাত করে। চট্টগ্রাম থেকে এসব তেল নৌ, রেল ও সড়কপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ দেয়া হয়। তবে বেশিরভাগ জ্বালানি তেল নৌপথে অয়েল ট্যাংকারে পরিবাহিত হয়। সম্প্রতি চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু করার পর নৌপথে তেল পরিবহন কিছুটা কমে আসে। চট্টগ্রামের প্রধান ডিপো থেকে যেভাবে তেল পরিবহন করা হোক না কেন তা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিভিন্ন আঞ্চলিক ডিপোতে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ দেয়া হয়। প্রধান ডিপো ও আঞ্চলিক ডিপোতে তেল সংরক্ষণের জন্য বিশালাকৃতির ট্যাংক রয়েছে। স্টিল স্ট্রাকচারের এসব ট্যাংকে সারা দেশে অন্তত ১৩ লাখ টন তেল মজুদ রাখা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট